কিছু সুন্দর অভ্যাস আপনার জীবন কে আমূল পরিবর্তন করে দিতে পারে। পৃথিবীর প্রায় সকল সফল মানুষই গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে মনযোগ দিয়েছেন, যা তাদের সফলতার অন্যতম মূল চাবিকাঠি।
নাকের পলিপাস বিনা অপারেশনে কোন রকম কাটা-ছেঁড়া ছাড়া ও এসিডমুক্ত চিকিৎসায় সম্পূর্ণ ভালো হয়।
সম্পূর্ণ আধুনিক পদ্ধতিতে বিনা অপারেশনে ১০০% এসিডমুক্ত ও কোন রকম কাটা-ছেঁড়া ছাড়াই ১০০% নিরাপদ চিকিৎসার মাধ্যমে পলিপাস রোগ স্থায়ীভাবে সমাধান হবে।
অনলাইনে হালাল উপার্জনের বিভিন্ন পথ ও পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করব
সত্যিকার অর্থে আমাদের চারপাশেই লক্ষ-লক্ষ কোটি-কোটি টাকা ছড়ানো-ছিটানো অবস্থায় আছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা না থাকার কারণে সে টাকাগুলো আমরা উপার্জন করতে পারছি না। বলতে পারেন যে এটা কিভাবে সম্ভব?
গ্রাম থেকে বিশ্বজুড়ে SDN এর মাধ্যমে আপনিও হতে পারবেন Global Entrepreneur
সমাহার ডট নেট (SDN) ডিজিটাল ও ট্রেডিশনাল পদ্ধতির সমন্বয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে ২০১৫ সাল থেকে। সবার জন্যে যেমন রয়েছে কাজ করার সুযোগ তেমনি রয়েছে কাজের স্বাধীনতাও।
ডিজিটাল উদ্যোক্তা পরিচয়টাই মূল পরিচয় নয়।প্রয়োজন দক্ষতা,কোয়ালিটি,পরিচিতি,মার্কেটিং এবং সেল।
ডিজিটাল উদ্যোক্তা হবে খুব বেশি টাকা লাগেনা।লাগে ধৈর্য ধরে সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগানোর কৌশল।আমাদের ব্যবসা সম্পর্কে দক্ষতা নেই,ব্যবসা সম্পর্কে ধারনা নেই,কিন্তু মুখে বলে ফেলি টাকা হলেই ব্যবসা হয়।
ফ্রি মার্চেন্ট রেজিষ্ট্রেশন চলছে…
৬০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা অনলাইনে
মহামারিতে ফেসবুকের মাধ্যমে নারীদের পণ্য বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে লকডাউনে ঘর থেকে বের না হওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারীই এ সময় অনলাইনে পণ্য কেনেন, যা ই-কমার্সের সঙ্গে জড়িত নারীদের জন্য ছিল আশীর্বাদের মতো। নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠন ওমেন এন্টারপ্রেনার অ্যাসোসিয়েশন সূত্র জানায়, করোনায় ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য প্রায় ৬০ শতাংশ নারী অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে এসেছেন।
করোনাকালীন সংকটে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অনেক নারী উদ্যোক্তা অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে আগ্রহী হয়েছেন। বিশেষভাবে শিক্ষিত নারীরা এই পথে বেশি এসেছেন। নারী উদ্যোক্তারা ফেসবুক, ওয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ভাইভারে পণ্যের প্রচার-প্রসার করেছেন। অনেকে ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট খুলেও ব্যবসা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অনলাইনে সহজে পণ্যের প্রচার ও প্রসার করা সম্ভব। অনলাইনে পণ্য কেনাবেচা করতে পারলে ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় কমে আসে। অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে নারী উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণ বাড়লে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। তখন ঘরের বাইরে বের না হতে সরকারি নির্দেশ দেওয়া হয়। আমদানি-রপ্তানি প্রায় বন্ধ ছিল। এমন পরিস্থিতিতে দোকান, শপিং মল বন্ধ ছিল। এমনকি এলাকার খুচরা বাজার পর্যন্ত নিয়মিত খোলা হতো না। ফলে নারী উদ্যোক্তারা পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত কাঁচামাল সংগ্রহ করতে হিমশিম খেয়েছেন।
রাজধানীর মিরপুর-১০ এলাকায় নোলক ব্র্যান্ডের পোশাকের দোকানের মালিক রাহেমা আক্তার জলি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ রোধে প্রায় ছয় মাস দোকান বন্ধ থাকায় আমার ব্যবসা লোকসানে পড়ে শেষ হতে চলেছিল। এমন সময় আমি ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে আমার ব্র্যান্ডের নিজস্ব ফেসবুক পেজে পণ্যের প্রচার শুরু করি। আমি অনেক ক্রেতা পেয়েছি।’
ওয়েবের প্রতিষ্ঠাতা সভানেত্রী নাসরিন ফাতেমা আউয়াল মিন্টু কালের কণ্ঠকে বলেন, চাকরির বাজার ভালো না। তাই উপার্জন করতে অনেক শিক্ষিত নারী এখন ব্যবসায় আসছেন। তাঁদের আধুনিক পদ্ধতিতে ব্যবসা করার আগ্রহ বেশি। আধুনিক পদ্ধতির অংশ হিসেবে তাঁরা অনলাইনে পণ্য বিক্রি করছেন। তবে এ সংখ্যা এখনো আশানুরূপ নয়। করোনায় দোকানে বিক্রি প্রায় বন্ধ ছিল। এতে নারী উদ্যোক্তারা ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়েই অনলাইনে পণ্য বিক্রি করেছেন।
একই মত জানিয়ে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এমসিসিআই) সাবেক সভাপতি এবং সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকেয়া আফজাল রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে লকডাউন দেওয়া হয়। এ সময় দোকানপাট স্বাভাবিক সময়ের মতো খোলা ছিল না। এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় গণপরিবহনসহ সব ধরনের চলাচল বন্ধ ছিল। এমন পরিবেশে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে অনেকে অনলাইনে পণ্য বিক্রি শুরু করেন।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অনলাইনই পণ্য বিক্রির সবচেয়ে ভালো প্ল্যাটফর্ম। শহরের নারী উদ্যোক্তারা অনলাইন সম্পর্কে ভালো জানলেও শহরের বাইরের নারী উদ্যোক্তারা এ বিষয়ে কম জানেন। এ জন্য তাঁরা অনলাইনের সুযোগও কম নেন। নারী উদ্যোক্তাদের অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত করতে সরকারকে বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি খাতেরও দায় আছে।’
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, সারা পৃথিবীর ব্যবসা-বাণিজ্য প্রতিদিনই প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়ছে। দেশের অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে পণ্য উৎপাদন করে বিক্রির জন্য এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নেওয়ায়ও অনেক সমস্যা রয়েছে। বিশেষভাবে নারীদের নিরাপত্তা জড়িত, যদিও আগের চেয়ে এসব বিষয়ে অবস্থা অনেক ভালো। তার পরও এসব সমস্যা এড়াতে ব্যবসা-বাণিজ্য অনলাইনের মাধ্যমে পরিচালনা করা সম্ভব হলে এ দেশের নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে চলা অনেক সহজ হবে।
For You, With You, For Ever….
সমাহার ডট নেট-এর পণ্য সামগ্রী ও সেবা পেতে রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
- অ্যাপ, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ডোমেইন হোস্টিং রেজিস্টেশন করা হয়।
- নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ফ্যাশন, পারফিউম, মেডিসিন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, টিভি, ক্যামেরা, মোটরবাইক, আসবাবপত্র, এপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপাটির পাশাপাশি জমি ও প্লট সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য নিবেদিত বিভিন্ন রকমের সার্ভিসগুলো দেয়া হয়।
- আমাদের রিসেলার হয়ে অবসর সময়ে বিনিয়োগ ছাড়া, দৈনিক শুধু ৩-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে নিশ্চিত পেসিভ ইনকাম করুন। ৬/৭ মাস নিয়মিত সময় দিলে অবশ্যই মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকামের নিশ্চয়তা রয়েছে।
- আকর্ষণীয় কমিশনে ডিলার, এজেন্ট ও সেলার সেন্টার দেয়া হচ্ছে…
এছাড়াও আপনি আপনার ব্যবসার জন্য ট্রেডিশনাল মার্কেটিং অথাৎ সরাসরি আপনার ব্যবসার প্রচার করাতে চাইলে। সমাহার ডট নেট এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেখান থেকে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য খুবই কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা ট্রেডিশনাল মার্কেটিং করাতে পারবেন। এছাড়া ও সমস্ত প্রকার ডিজিটাল অথবা ট্রেডিশনাল সুবিধা নিতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার ব্যবসাকে কি ভাবে অনলাইনে নিয়ে যাবেন বা ব্যবসাকে বড় করবেন অথাৎ ব্যবসার প্রসার ঘটাবেন তা জানতে চান তবে , সময় নষ্ট না করে এখুনি রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন। তার জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রীতে আপনি পরামর্শ পাবেন।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দরকারী কিছু তথ্য দিয়েছে। পরবর্তী পোস্ট পাওয়ার জন্য সাথেই থাকুন
নারী উদ্যোক্তা হওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতা দূর হবে কবে?
শুরুটা করি নারী উদ্যোক্তাদের একটি সাফল্যের কাহিনি দিয়ে। দেশের নারী উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্য বিক্রির জন্য বিশেষায়িত ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস গৃহবধূ ডটকম যাত্রা শুরু করেছে। সাইটটিতে শুধু নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য ও সেবা বিক্রি করা হবে। তবে নারী কিংবা পুরুষ যে কেউ সেখান থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। উদ্যোক্তা হিসেবে নারীদের এগিয়ে নিতে প্ল্যাটফর্মটি দারুণ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে। কারণ প্রযুক্তির উৎকর্ষের যুগে অনলাইনে কেনাকাটা ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে। সেখানে এ মার্কেটপ্লেসটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বলা চলে। বলে রাখা ভালো, গৃহবধূ ডটকমের কর্ণধারও একজন নারী। সাহেদা তাজনিয়া নামের ওই নারী নিজেও একজন উদ্যোক্তা হিসেবে এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্মের যাত্রা শুরু করলেন।
বিশ্বজুড়ে বিক্রয়কেন্দ্রের মাধ্যমে পণ্যের বেচাকেনা ক্রমেই নি¤œমুখী। আর জনপ্রিয়তা বাড়ছে, অনলাইনের মাধ্যমে পণ্য কেনাবেচা। সে পালে হাওয়া দিতে আমাদের দেশে বেশ কিছু অনলাইন মার্কেটপ্লেস গড়ে উঠেছে। এর বাজারও ক্রমেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশে প্রায় এক হাজার অনলাইন মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে দৈনিক প্রায় ৩০ থেকে ৪৫ হাজার পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রতিদিনই এ মাধ্যমে পণ্য বিক্রির পরিমাণ বাড়ছে। এতগুলো মার্কেটপ্লেস থাকলেও নারী উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষায়িত কোনো মার্কেটপ্লেস এতদিন ছিল না বা গড়ে ওঠেনি। সে ক্ষেত্রে গৃহবধূ ডটকম অবশ্যই দারুণ একটি উদ্যোগ। এর মাধ্যমে দেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে নারী মার্চেন্টরা নিজেদের পণ্য নিজেরাই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রির সুযোগ পাবেন। অনেকে উদ্যোক্তা হতেও উৎসাহিত হবেন।
এখন আসি মূল কথায়। সম্প্রতি ‘স্টাডি অন এমপ্লয়মেন্ট, প্রডাকটিভিটি অ্যান্ড সেক্টরাল ইনভেস্টমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে দেশে বেকারত্বের চিত্র তুলে ধরেছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে এখন ছদ¥ বেকারের সংখ্যা এক কোটি ২৫ লাখ। তবে এখনও ১২ লাখ পুরুষ আর ৯ লাখ নারী পুরোপুরি বেকার রয়েছেন। এই ২১ লাখ বেকার সপ্তাহে এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়ে কাজ পাননি। অবশ্য এ ধরনের পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে প্রায়ই। তবে ২০১৭ সালের তুলনায় ২০১৮ সালে পুরুষের তুলনায় নারীর কর্মসংস্থান বেশি হয়েছে। আর এক বছরের ব্যবধানে নারী বেকার কমেছে সাড়ে চার লাখ। অন্যদিকে পুরুষ বেকার কমেছে দেড় লাখ। এখানে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অগ্রগতির বিষয়টি স্পষ্ট। তবে এখনও বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ বেকার রয়েছে, তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।
দেশে বেকারত্ব নিয়ে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। নানা ধরনের পন্থার কথাও বাতলে দেওয়া হয়। বেকারত্ব দূরীকরণ, নতুন কর্মসংস্থান, অর্থনীতির উন্নতিসহ নানা দিক বিবেচনায় উদ্যোক্তা গড়ে তোলার কথা বলা হয় প্রায়ই। দেশে বিপুলসংখ্যক বেকার জনগোষ্ঠী থাকায় তাদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা বা উৎসাহিত করার ধারণাটা বেশ জোরালো হয়েছে। নানা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে অনেকে উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হচ্ছেনও। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আবার নারী। এখানে বলে রাখা ভালো, দেশে উদ্যোক্তা হতে গিয়ে মূলধন প্রাপ্তি, সহযোগিতা, কর্মী, জায়গাপ্রাপ্তিসহ নানা ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়ে গেছে অনেক। পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও এগুলো মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তবে তার সঙ্গে নারীদের সামনে আরও কিছু সমস্যা দেখা দিচ্ছে, যা তাদের সামনে বাধার পাহাড় তৈরি করে রেখেছে।
এটা সত্য, অনেক নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করায় তাদের ক্ষমতায়নের ধারণায় অগ্রগতি হয়েছে অনেক। সীমাহীন বাধা অতিক্রম করে অনেকেই সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছেছেন। তবে তাদের সার্বিক অগ্রগতি এখনও আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে পৌঁছেনি। রফতানি বাণিজ্যে নারী উদ্যোক্তাদের ভূমিকা এখনও সীমিত। এছাড়া আরও অনেক ক্ষেত্রেই নারীরা কাক্সিক্ষত সফলতা পাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি দেশে অনেক আগে থেকে চলে আসা সামাজিক গোঁড়ামিও কাজ করছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এর কারণ খুঁজে বের করে তা দ্রুত সমাধান করা জরুরি। কারণ দেশের সমৃদ্ধির স্বার্থে নারীদের এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। আর এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করা না গেলে নারীরাও সামনে এগোতে পারবেন না ভালোভাবে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নারী উদ্যোক্তাদের ভূমিকা নিয়ে সম্প্রতি এসএমই ফাউন্ডেশন ও বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা (বিআইডিএস) গবেষণায় এ-সংক্রান্ত বিস্তারিত উঠে এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মাত্র দুই শতাংশ নারী উদ্যোক্তার পণ্য রফতানি হচ্ছে। পণ্য বাজারজাতকরণে যথাযথ প্রশিক্ষণ না থাকা, ঋণপ্রাপ্তিতে বিশেষ সুবিধা না থাকা এবং সামাজিক ও পারিবারিক প্রতিবন্ধকতায় অবিবাহিত নারীরা এখনও উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি হতে পারছে না। এছাড়া দেশের ৮৬ শতাংশ নারী উদ্যোক্তাই বিবাহিত। তাদের ৬৫ শতাংশেরই আবার পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে। এখানে যে বিষয়টি বোঝা যাচ্ছে সেটি হলো, অবিবাহিত নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার সংখ্যা সীমিত। এছাড়া যাদের আগে থেকেই পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে বা আর্থিক স্বচ্ছলতা আছে তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ বেশি। অন্যদিকে অপেক্ষাকৃত তরুণ ও আগে থেকে মূলধনের সংস্থান না থাকা নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার সুযোগ সীমিত।
একটা সময় ছিল, যখন এদেশে নারীরা ছিলেন অবহেলিত। উদ্যোক্তা হওয়া দূরে থাক, শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত, বাল্যবিয়ে, নির্যাতন, নিপীড়নের শিকার হতে হতো তাদের। বাড়ির কাজ ছাড়া অন্য ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ কল্পনাও করা যেত না। ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা চাকরির বাজারে তাদের প্রবেশের সুযোগ ছিল সীমিত। তবে বর্তমানে সে অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে অনেক। নানা ক্ষেত্রে নারীরা এগিয়ে আসছেন। গত কয়েক বছরে দেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলোয় নারীদের জয়জয়কার। চাকরিসহ নানা ক্ষেত্রে পুরুষদের সঙ্গে সমানতালে লড়ছে তারা। দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতির স্বার্থে এটি ভালো খবর নিঃসন্দেহে। তারপরও উদ্যোক্তা হওয়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা এখনও প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন, যা তাদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিআইডিএস ও এসএমই ফাউন্ডেশনের গবেষণা অনুযায়ী, দেশে ৭৫ শতাংশ নারী উদ্যোক্তার বয়স ৩১ থেকে ৫০ বছর। আর তরুণ নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা মাত্র ১৩ শতাংশ। শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর। অথচ আজকের পৃথিবীতে এই তরুণদেরই অর্থনীতির চালিকাশক্তি মনে করা হয়। তরুণ জনশক্তিকে মূল পরিকল্পনায় রেখে দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে উন্নতির শিখরে পৌঁছে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের দেশে যদি এই বয়সের নারীরা উদ্যোক্তা হতে এগিয়ে না আসেন, তাহলে নারী উদ্যোক্তাদের সফলতার হারও কম থাকবে বলেই মনে হয়। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, অপেক্ষাকৃত তরুণরা আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও অনেক বেশি অগ্রসর। সে জন্য তরুণ নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা প্রয়োজন। কিন্তু এটিই আমাদের সামনে মূল চ্যালেঞ্জ নয় কি?
গবেষণা বলছে, উদ্যোক্তা হতে গিয়ে নারীরা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন পরিবার কিংবা সমাজ থেকে। পরিবার থেকে আর্থিক কোনো সহযোগিতাও তারা পাচ্ছেন না। আবার তরুণদের উৎসাহ না থাকায় তাদের উদ্যোক্তা হওয়ার হারও মাত্র দুই শতাংশ। সার্বিকভাবে বাধা পাচ্ছেন সব বয়সের নারীরাই। এমনকি অনেক নারীর স্বামী কিংবা শ্বশুরবাড়ির লোকজনও চান না, তারা উদ্যোক্তা কিংবা ব্যবসায়ী হয়ে উঠুক। অতীতে নারীদের বিরুদ্ধে সমাজে যেসব ধ্যান-ধারণা প্রচলিত ছিল, এটি তারই বহিঃপ্রকাশ বলে মনে হয়। এর থেকে বেরিয়ে আসা জরুরি। এসব বাধা দূর করতে হলে সবার আগে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে। অবশ্য আশাব্যঞ্জক ব্যাপার হলো, এ ধরনের পারিবারিক ও সামাজিক বাধা ক্রমেই শিথিল হচ্ছে।
এরপরও দেশে অনেক নারী উদ্যোক্তা ট্রেড লাইসেন্স পেতে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। অনেকের বাড়তি অর্থ দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স পেতে হয়েছে, প্রয়োজন হয়েছে দীর্ঘ সময়ের। এভাবে অহেতুক জটিলতায় পড়লে নারীরা উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন সেটাই স্বাভাবিক। এ সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে সবার আগে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোকে নারীবান্ধব করে গড়ে তুলতে হবে। আর্থিক সংস্থানের জন্য মূলধনের ব্যবস্থা করতে গিয়ে ঋণপ্রাপ্তিতে বাধার মুখে পড়ছেন তারা। সেক্ষেত্রে নারী উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যাংকের নিয়মনীতিতে শিথিলতা আনতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ জন্য বিশেষ নির্দেশনা জারি করতে পারে। এছাড়া ভূমি, কাঁচামাল, বাজারজাত, রফতানিসহ যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলোও সমাধান করা জরুরি।
লেখার শেষ পর্যায়ে এসে আরও একজন অদম্য নারীর কথা বলতে চাই। কয়েক মাস আগে সাবেক একজন সহকর্মী হঠাৎ করেই চাকরি হারান। তখন তার তেমন কোনো অর্থ সঞ্চয় না থাকায় দিশাহীন হয়ে পড়েন তিনি। তবে সে সময় ত্রাতা হয়ে এগিয়ে আসেন তার স্ত্রী। আগে থেকেই তিনি বাসা থেকে শখের বশে নারীদের পোশাক তৈরি করে অনলাইনে বিক্রি করতেন। তবে স্বামী চাকরি হারানোর পর সেই উদ্যোগটি তিনি প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে যান, সফলও হয়েছেন। স্বামীর দুঃসময়ে তাকে যোগ্য সমর্থনটা দিতে পেরেছেন তিনি। পরে অবশ্য সাবেক সেই সহকর্মী ভালো চাকরি পেয়েছেন। দুজনের যৌথ আয়ে এখন সুখে-শান্তিতে বসবাস করছেন তারা।
বর্তমানে ব্যবসা-বাণিজ্যে উদ্যোক্তা হিসেবে শিক্ষিত নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়েও অনেক নারী শিল্পায়ন ও ব্যবসায় সম্পৃক্ত হচ্ছেন। তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানেও তারা ক্রমেই সমৃদ্ধ হচ্ছেন। এখন তাদের জন্য দরকার যোগ্য পৃষ্ঠপোষকতা। এজন্য তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে, প্রযুক্তি জ্ঞান বাড়াতে হবে, মূলধনের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশে নারী উদ্যোক্তাদের বিষয়ে অনেক তথ্যই এখনও অজানা রয়েছে। রাষ্ট্রীয় ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উদ্যোগ নিয়ে তাদের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধান করা জরুরি। নারীদের এগিয়ে নিতে হলে সব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। পাশাপাশি তরুণ বয়সী নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের মনে রাখা দরকার, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কর্মসংস্থানের বড় উৎসও বটে। এ খাতে নারীদের ব্যাপকহারে যুক্ত করতে পারলে উন্নয়নের গতি আরও বাড়বে। সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।
For You, With You, For Ever….
সমাহার ডট নেট-এর পণ্য সামগ্রী ও সেবা পেতে রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
- অ্যাপ, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ডোমেইন হোস্টিং রেজিস্টেশন করা হয়।
- নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ফ্যাশন, পারফিউম, মেডিসিন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, টিভি, ক্যামেরা, মোটরবাইক, আসবাবপত্র, এপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপাটির পাশাপাশি জমি ও প্লট সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য নিবেদিত বিভিন্ন রকমের সার্ভিসগুলো দেয়া হয়।
- আমাদের রিসেলার হয়ে অবসর সময়ে বিনিয়োগ ছাড়া, দৈনিক শুধু ৩-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে নিশ্চিত পেসিভ ইনকাম করুন। ৬/৭ মাস নিয়মিত সময় দিলে অবশ্যই মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকামের নিশ্চয়তা রয়েছে।
- আকর্ষণীয় কমিশনে ডিলার, এজেন্ট ও সেলার সেন্টার দেয়া হচ্ছে…
এছাড়াও আপনি আপনার ব্যবসার জন্য ট্রেডিশনাল মার্কেটিং অথাৎ সরাসরি আপনার ব্যবসার প্রচার করাতে চাইলে। সমাহার ডট নেট এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেখান থেকে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য খুবই কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা ট্রেডিশনাল মার্কেটিং করাতে পারবেন। এছাড়া ও সমস্ত প্রকার ডিজিটাল অথবা ট্রেডিশনাল সুবিধা নিতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার ব্যবসাকে কি ভাবে অনলাইনে নিয়ে যাবেন বা ব্যবসাকে বড় করবেন অথাৎ ব্যবসার প্রসার ঘটাবেন তা জানতে চান তবে , সময় নষ্ট না করে এখুনি রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন। তার জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রীতে আপনি পরামর্শ পাবেন।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দরকারী কিছু তথ্য দিয়েছে। পরবর্তী পোস্ট পাওয়ার জন্য সাথেই থাকুন
নারী উদ্যোক্তা: আছে সুযোগ, সম্ভাবনাও
সাঈদা আক্তার : বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে একজন নারী শুধু চাকরির বাজারে নয়, বরং নিজে উদ্যোক্তা হয়ে অন্যের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন।
অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগে বস্ত্র, গয়না, সাংসারিক পণ্য, শিশুখাদ্য, প্রসাধনীর আধিক্য দেখা গেলেও সীমিতসংখ্যক সেবা ও প্রযুক্তিভিত্তিক উদ্যোগ চোখে পড়ার মতো। এই মাধ্যমে নারী উদ্যোক্তাদের তুলনামূলক বেশি উপস্থিতি লক্ষণীয়। একটু গভীরে গেলেই বোঝা যায় যে সামাজিক, পারিবারিক দায়বদ্ধতা ও প্রতিবন্ধকতা বিশেষ বাধা হয়ে দাঁড়ায় না বলে অনলাইন উদ্যোগে নারীদের এই স্বচ্ছন্দ পদচারণা।
কোন ধরনের ব্যবসায় উদ্যোগী হবেন এই সিদ্ধান্ত নিতে যে বিষয়গুলো বিবেচ্য হওয়া উচিত তা হলো:
● জ্ঞান আহরণ এবং দক্ষতা
● নিজস্ব আগ্রহ
● অভিজ্ঞতা
● পুঁজির পরিমাণ
● প্রশিক্ষণ (অনলাইন, অফলাইন)
● বাজার চাহিদা
● সামাজিক, ব্যক্তিগত, সামষ্টিক সমস্যা সমাধানে পারদর্শিতা বা উদ্ভাবনী পন্থা
● ব্যক্তিগত যোগাযোগ
বাংলাদেশে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য প্রধান বাধা হিসেবে যেটি বিবেচনা করা হয় তা হলো আমাদের সংস্কৃতি। যেখানে আমরা নারীকে একটি নির্দিষ্ট ভূমিকায় দেখতে অভ্যস্ত ছিলাম। কিন্তু সময় পাল্টেছে, বাস্তবতা এখন ভিন্ন। ৩০ বছর আগের বাংলাদেশের অর্থনীতি আর ২০১৮–এর অর্থনীতির হিসাব ভিন্ন। এখন পারিবারিক দায়িত্ববোধের সঙ্গে সঙ্গে একজন নারী তাঁর সত্তাকে এই সমাজে সফলভাবে পরিচিত করে তুলতে সক্ষম।
দীর্ঘ ২০ বছর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকার পর নানা হিসাব–নিকাশ সেরে ভালো লাগার কাজটিতেই মনোযোগী হয়েছেন নাঈমা মিতা। নিজস্ব আগ্রহ ও অভিজ্ঞতা ব্যবহার করে একটু একটু করে গড়ে তুলেছেন ক্রেতাবলয়, অর্জন করেছেন আস্থা। শুরুটা স্বাভাবিকভাবেই মসৃণ না হলেও তিন বছরে তাঁর পোশাকভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘বুবুর বায়না’ পেরিয়েছে অনেক বন্ধুর পথ।
নাঈমা মনে করেন, অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগগুলোকে এখনো অনেকেই সংসার সামলে অবসরে করা শখের কাজ ভাবে। শুরুতে তাঁর এমনও অভিজ্ঞতা হয়েছে, অনেকে তাঁর ব্যবসাটি ঘরকেন্দ্রিক ভেবে তেমন খরচের ব্যাপার নেই বলে ন্যায্য স্বীকৃতিটিও দেয়নি। কিন্তু তিনি বিশ্বাস করেন, যেকোনো সনাতনী পেশাজীবীর চেয়ে একজন উদ্যোক্তাকে তাঁর ব্যবসায় ভাবনা, শ্রম ও সময় কোনো অংশেই কম দিতে হয় না।
গয়নাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ‘আরটোপলিস’–এর কর্ণধার সুমাইয়া সায়েদ নিজের অভিজ্ঞতা মিলিয়েছেন অধিকাংশ নারী ও মা উদ্যোক্তাদের সঙ্গে, যাঁরা একাধারে উদ্যোক্তা ও তাঁদের সন্তানদের প্রাথমিক অভিভাবক। নিজস্ব চেষ্টায় গড়ে তোলা ভালোবাসার কাজটিতে পারিবারিক দায়বদ্ধতার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা পূর্ণ সময় আর শ্রম দিতে পারেন না বলে তিনি মনে করেন।
তবে, অনলাইন ব্যবসার সুবিধাজনক দিক হলো ক্রেতার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ যা ব্যবহার করে তাঁদের আস্থার জায়গায় পৌঁছানো সম্ভব। আর তাঁদের নমনীয়তাও প্রশংসাসূচক বলেই উদ্যোগ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়।
উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে এই দুই সফল ব্যবসায়ী সহায়ক হিসেবে পাশে পেয়েছেন ‘মেয়ে নেটওয়ার্ক’কে, যুক্ত হয়েছেন নারী উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্ম ‘রাঙতা’র ‘হুটহাট’-এ। এ ধরনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশের নারী উদ্যোক্তাদের দিকে সম্মান, সহযোগিতার হাত যেমন বাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি প্রশিক্ষণ, উত্তরোত্তর উন্নয়ন ইত্যাদির এক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে দিয়ে বাড়িয়ে দিয়েছে তাদের স্বকীয়তা আর পণ্যের মান।
আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার আগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস কমিশনে ইকোনমিক ক্যাডারে ৬ বছর কাজ করেছি। উন্নয়ন খাত এবং দেশসেরা আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কাজসহ কর্মজীবনের দীর্ঘ ১২ বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে খুব কাছ থেকে নারীদের চেষ্টা, বন্ধুর পথকে মসৃণ করার এক মনস্তাত্ত্বিক লড়াই দেখে এসেছি।
নবীন উদ্যোক্তারা কাজের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে পারেন:
* প্রাথমিকভাবে ব্যবসা শুরু করার পর একপর্যায়ে নিজস্ব পুঁজির ওপর নির্ভর না করে ব্যবসালব্ধ আয়ের ওপর ভিত্তি করে ব্যবসা চালিয়ে নিতে হবে।
* ব্যবসা–সংক্রান্ত সব দায়িত্ব একা পালন না করে বিশেষ বিশেষ জায়গায় লোক নিয়োগ করা প্রয়োজন; আপনি নিজে যে একটি বা দুটি বিষয়ে পারদর্শী শুধু সেই কাজগুলোরই দায়িত্ব নেবেন।
* বাজারে প্রচলিত পণ্যের ব্যবসায় যাওয়া যাবে না এবং পণ্য নতুনই হতে হবে—এ ধারণাও যথার্থ নয়। বরং পণ্য বা সেবার স্বকীয়তার বিষয়টি খেয়াল রাখা জরুরি।
* শুধু পণ্যভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণ না করে সামাজিক প্রয়োজন, সামষ্টিক উন্নয়নে সহায়ক সেবার প্রতিও দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
* কর্ণধার ও কর্মচারীদের মধ্যে আয়ের সুষম বণ্টন হওয়া চাই।
একজন সফল নারী উদ্যোক্তার উপলব্ধি দিয়ে শেষ করি। অনেকে হয়তো এই কথা থেকে প্রেরণা পাবেন—‘ব্যবসার সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হলো সম্পর্ক তৈরিতে বিনিয়োগ, কেননা মানুষ শুধু পণ্যই কেনে না, একই সঙ্গে তাঁর সঙ্গে জুড়ে থাকা ব্যক্তি সত্তার নির্যাস আর মূল্যবোধ গ্রহণ করে; গুরুত্ব দেয় পণ্যের আড়ালে থাকা অভিপ্রায়কে।’
নারী উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ
নারী উদ্যোক্তাদের বৈশ্বিক সূচকে বাংলাদেশ মাস্টারকার্ড ইন্ডেক্স অব উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস ২০১৮—তে বাংলাদেশের অবস্থান:
২০১৭ ২০১৮ স্কোর পরিবর্তন ২০১৭ ২০১৮ র্যাঙ্কিং পরিবর্তন
নারী ব্যবসা মালিকানা ২৫.৮ ২৫.৯ ০% ১৯ ১৮ ১
নারীদের অগ্রগতি ফলাফল ২৪.৩ ২৪.৩ ০% ৫৫ ৫৫ ০
জ্ঞান সম্পদ এবং অর্থায়ন অবস্থা ৪৭.৪ ৪৮.৮ ৩% ৫৭ ৫৭ ০
নারী উদ্যোক্তা সহযোগী শর্ত ৪০.৬ ৪১.৩ ২% ৫৬ ৫৬ ০
এই সূচকটি মোট ৫৭টি দেশের ওপর পরিচালিত যেখানে বাংলাদেশের সামগ্রিক অবস্থান ৫৭; যা ২০১৭ সাল থেকে আরও এক ধাপ পিছিয়েছে। অবাক করার বিষয় হলো, বাংলাদেশে নারী ব্যবসায় মালিকানা অন্য অনেক উন্নত রাষ্ট্রের তুলনায় বেশি। সে ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সরকারি, বেসরকারি সহায়তা এবং নারী উদ্যোক্তাবান্ধব নীতি প্রণয়ন আর তার যথাযথ বাস্তবায়ন এই সূচকে বাংলাদেশকে একটি সম্মানজনক অবস্থান তৈরিতে সহায়তা করবে।
লেখক: প্রভাষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
For You, With You, For Ever….
সমাহার ডট নেট-এর পণ্য সামগ্রী ও সেবা পেতে রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
- অ্যাপ, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ডোমেইন হোস্টিং রেজিস্টেশন করা হয়।
- নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ফ্যাশন, পারফিউম, মেডিসিন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, টিভি, ক্যামেরা, মোটরবাইক, আসবাবপত্র, এপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপাটির পাশাপাশি জমি ও প্লট সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য নিবেদিত বিভিন্ন রকমের সার্ভিসগুলো দেয়া হয়।
- আমাদের রিসেলার হয়ে অবসর সময়ে বিনিয়োগ ছাড়া, দৈনিক শুধু ৩-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে নিশ্চিত পেসিভ ইনকাম করুন। ৬/৭ মাস নিয়মিত সময় দিলে অবশ্যই মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকামের নিশ্চয়তা রয়েছে।
- আকর্ষণীয় কমিশনে ডিলার, এজেন্ট ও সেলার সেন্টার দেয়া হচ্ছে…
এছাড়াও আপনি আপনার ব্যবসার জন্য ট্রেডিশনাল মার্কেটিং অথাৎ সরাসরি আপনার ব্যবসার প্রচার করাতে চাইলে। সমাহার ডট নেট এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেখান থেকে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য খুবই কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা ট্রেডিশনাল মার্কেটিং করাতে পারবেন। এছাড়া ও সমস্ত প্রকার ডিজিটাল অথবা ট্রেডিশনাল সুবিধা নিতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার ব্যবসাকে কি ভাবে অনলাইনে নিয়ে যাবেন বা ব্যবসাকে বড় করবেন অথাৎ ব্যবসার প্রসার ঘটাবেন তা জানতে চান তবে , সময় নষ্ট না করে এখুনি রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন। তার জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রীতে আপনি পরামর্শ পাবেন।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দরকারী কিছু তথ্য দিয়েছে। পরবর্তী পোস্ট পাওয়ার জন্য সাথেই থাকুন
উদ্যোক্তা হিসেবে নারী
এইতো সেদিনও আমাদের সমাজে একটা কথা প্রচলিত ছিল ‘নারী কুড়িতেই বুড়ি’।কারণ, তখন নারীরা সন্তান জন্মদান, প্রতিপালন এবং অবরোধবাসিনীর চেয়ে ভিন্ন কোনো কাজে তাদের অবাধ বিচরণ ছিল না। আজ তারা পুরুষের সাথে পাল্লা দিয়ে কাজ করছেন। বলা যায়, বর্তমানে শিক্ষায় নারীরা পুরুষের সমানে সমান, আবার কৃতিত্বে কোনো কোনো ক্ষেত্রে বরং পুরুষের চেয়ে এগিয়ে।
এখন সময় এসেছে অর্থনীতিতে নারীদের পুরুষের সমান সাফল্য দেখানো। তাহলেই কেবল নারী মুক্তি, নারীর স্বাধীনতা, নারীর কর্তৃত্ব ও নারীর ক্ষমতা কার্যকর হবে। কারণ, নারীর ক্ষমতায়ন শুধু আইনে হবে না, চাই অর্থ। এমনই কিছু তরুণ উদ্যোক্তা নারীর গল্প শুনি…
ড চিং চিং
তিনি একজন তরুণ উদ্যোক্তা। রিকশা পেইন্ট, আদিবাসী ফ্যাশন নিয়ে কাজ করছেন তিনি। ড চিং চিংয়ের ব্র্যান্ডের নাম ‘ফিনারী’।
তিনি বলেন, আমি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে কিছুদিন হলো ইতিহাস বিষয়ে অনার্স, মাস্টার্স সম্পন্ন করেছি। আসলে মাস্টার্স সম্পন্ন করার পর অন্য ১০ জনের মতো আমারও লক্ষ্য ছিল বিসিএসের। কিন্তু এই সোনার হরিণ আমার কাছে অনেক দামি হওয়ার কারণে আশা ছেড়ে দেই। এর মধ্যে শুরু করি আমার বিবাহিত জীবন। আমার স্বামী আমাকে একজন উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য উৎসাহ দিতে থাকেন, তারই সাথে কী নিয়ে কাজ করতে পারি তারও একটা পরামর্শ দেন। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেই আমি রিকশা পেইন্ট ও আদিবাসী ফ্যাশন নিয়ে কাজ করব।যেহেতু আমার জন্মস্থান বান্দরবান ও আমি একজন আদিবাসী জনগোষ্ঠীর হওয়ার কারণে আদিবাসীদের খুঁটিনাটি জানা আমার জন্য সহজ ছিল। তাই যেই ভাবনা সেই কাজ, শুরু করে দিলাম।
প্রথমে আমি সামাজিক মাধ্যমে ২০১৬ সালে একটা পেইজ খুলে ওখানে আমার উদ্যোগের পণ্যগুলো আপলোড দিতে থাকি, সেক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করেছে আমার বন্ধুরা। তাই একজন উদ্যোক্তা সে যেই হোক না কেন, তার সাথে পরিবার, বন্ধুর মানসিক ও সামাজিক সহযোগিতা খুবই প্রয়োজন।
উদ্যোগের শুরুর দিকে আমি যেমন পরিবার ও বন্ধুদের সহযোগিতা পেয়েছি, আর এখন আমি উদ্যোক্তা বন্ধুদের ও সাথে সাথে অনেক প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা পেয়ে থাকি। উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ না করলেই নয়- বিডিওএসএন, এসএমই ফাউন্ডেশন, বিডি বি’ইয়া, মাইডাস ফিন্যান্স ও বিভিন্ন জনপ্রিয় নারী সংগঠন। আমি এদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এখন একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে খুবই ভালো আছি।
তাহমিনা কবির
আমি হোম ইকোনমিকস কলেজে সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনারশিপ বিভাগের ফাইনাল ইয়ারে পড়ছি। সাথে যব, পাট ও পাটজাত পণ্য নিয়ে কাজ করছি। আমার প্রতিষ্ঠানের নাম ডলি’স। চাকরি করার কথা কখনো ভাবিনি। ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করার সময় যখন হয়েছে, ঠিক তখন থেকেই নিজেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট (স্বাধীন) করতে চেয়েছি।
এখন বিজনেস ভালো হচ্ছে। অস্থায়ী ভিত্তিতে কিছু কর্মীও আছে।নিজের পাশাপাশি অন্যদের অনুপ্রেরণা হয়ে উঠতে পেরেছি, যারা আমাকে দেখে ভাবে নিজে কিছু করবে। বিভিন্ন কর্পোরেটের সাথে কাজ করছি।
সাজিয়া রহমান
স্বপ্নবাজ নারী সাজিয়া আবুজর গিফারি কলেজ থেকে পড়া লেখা শেষ করেছেন। তিনি কর্মমুখী দক্ষতা উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছেন।
তিনি বলেন, বরাবরই স্বাধীন চেতা মানুষ ছিলাম।বেকারত্ব দূরীকরণে কর্মমুখী করে তোলার লক্ষ্যে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা। বর্তমানে অনেক ভালো আছি।আমার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অনেক যুব/যুব মহিলাদের আত্মকর্মী হিসেবে তৈরি করেছি। অনেকেই চাকরির পেছনে না ছুটে আত্মকর্মসংস্থান গড়ে তুলেছেন।
তাহমিনা আরফিন অর্পিতা
অত্যন্ত পরিশ্রমী, বুদ্ধিদীপ্ত ও ন্যায়পরায়ণ একজন মানুষের নাম তাহমিনা আরফিন। নিত্য নতুন ফ্যাশন ডিজাইন নিয়ে কাজ করছেন তিনি। পিতৃ বিয়োগের পর স্বামীর পৃষ্ঠপোষকতায় ও নিজ প্রচেষ্টায় যিনি আজ একজন সফল উদ্যোক্তা।
ছাত্র অবস্থায় লেখাপড়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও করেছেন তাহমিনা আরফিন এবং চাকরি করার পাশাপাশি কীভাবে উদ্যোগ নিতে হয় তা তিনি শিখেছেন। স্নাতোকোত্তর শেষে ২০১৭ সালে নিজে কিছু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি। নিজেই তৈরি করতেন পণ্য এবং তৈরিকৃত পণ্য স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে বিপণন কর্ম সম্পন্ন করতেন। এ সমস্ত কর্মকাণ্ডে ছায়ার মতো পাশে থেকে উৎসাহ যুগিয়েছেন তাহমিনা আরফিনের জীবনসঙ্গী; যার সহযোগিতা না পেলে তিনি হয়তো উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে আরো বেগ পেতে হতো।
বাংলাদেশ ইয়ুথ এন্টারপ্রাইজ অ্যাডভাইস অ্যান্ড হেল্প সেন্টার (বি’ইয়া), এসএমই ফাউন্ডেশন ও ই-ক্যাব থেকে প্রশিক্ষণও গ্রহণ করেন তিনি। দক্ষ হাতে পণ্য তৈরি ও বিপণন কার্য সম্পাদন করে তিনি সফল হয়েছেন।
বিভিন্ন মেলায় অংশগ্রহণ করে অর্ডার পেয়ে ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি করেছেন এই সফল উদ্যোক্তা। ভবিষ্যতে কারখানা প্রতিষ্ঠা করে বিপুল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন তাহমিনা আরফিন।
বাংলাদেশের এসএমই খাতের সকল পণ্য নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন তিনি। দেশের পণ্য যেন দেশের বাজার ছাড়িয়ে বিদেশে সম্মানজনক স্থান দখল করতে পারে, সেই প্রত্যাশায় কাজ করতে চান এই সফল নারী উদ্যোক্তা।
লাবনী আহমেদ
চাঁদপুর জেলা শহরে মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লাবনী। বাবা জহিরুল ইসলাম খান একজন সরকারি চাকরিজীবী। তিন বোন দুই ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট তিনি। খুব আদরে বড় হন ঢাকার যাত্রাবাড়ি নিজের বাড়িতে।
তিনি বলেন, আমার যখন ৪ বছর বয়স, তখন হঠাৎ করে বাবা মারা যান।ছোটবেলা থেকে দেখে এসেছি মায়ের সংগ্রামী জীবন। আমার স্কুলজীবন শুরু হয় শেখদী এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ে। মায়ের কাছ থেকে শেখা সেলাইয়ের কাজ। শখ করে নিজের জন্য, বোনদের জন্য সেলাই করতাম বিভিন্ন ডিজাইনের জামা।সুতার কাজ, ব্লক, বাটিক। লেখাপড়ায় ছিলাম মোটামুটি।
দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম।পরীক্ষা দেওয়ার আগে মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন।সবাই তাড়াহুড়ো করে পরীক্ষার পর আমাকে বিয়ে দিয়ে দেন।স্বামী সৈয়দ বেনজীর আহমের প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করেন। বিয়ের পর অনার্স শেষ করি। কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে একটা মেয়ে সৈয়দা নাফিসা তাবাসসুম। পাচঁ বছর পর ছেলে সৈয়দ রাইয়ান রাহিম। সুখেই কাটছিল জীবন। কিন্ত সুখ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। আমার স্বামী অসুস্থ হয়ে পড়েন।চাকরি চলে যায়। যা জমানো ছিল সব শেষ হয়ে যায় স্বামী আর সংসার খরচে। মেয়ে তখন এসএসসি দিবে। মেয়ের স্বপ্ন বড় হয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু তাকে কোনো শিক্ষা দিতে পারি নাই।ফরম ফিলাপের টাকা জোগার করতে পারছিলাম না। শেষ সম্বল একটা গলার চেন আর নাকের ফুল বিক্রি করি। মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে পারি নাই।ও এইচএসসি বাণিজ্য বিভাগ নিয়ে কলেজে ভর্তি হলো।
হাতে কিছু টাকা ছিল আর এক ভাই কিছু দিলো। ২০১৫ সালে মাত্র ২০,০০০ টাকা নিয়ে ব্লক এ ড্রেস তৈরি করে একটা অনলাইন পেইজ খুলি। কিন্তু তেমন সাড়া পেলাম না। পরে ব্যাগে ভরে কাঁধে নিয়ে আত্নীয়দের বাসায় গিয়ে বিক্রি করা শুরু করি। ভালো সাড়া পেলাম। সেই থেকে শুরু। জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় পার করেছি। অনেক কথা শুনেছি। আত্মীয়-স্বজন বলা শুরু করলো জামাই বসে বসে বউয়ের কামাই (ইনকাম) খান। তখন সে ছোট্ট একটা চাকরি নেয়। অল্প বেতন।খেয়ে না খেয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনেক সংগ্রাম করেছি।
আমার স্বামী আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। ইসলামপুর, চক বাজার, বাবু বাজার, কেরানীগঞ্জ সব জায়গায় ওকে নিয়ে গেয়েছি পাইকারিতে কোথায় কমে পাওয়া যায়। অনেকগুলো কোর্স করেছি। বিসিক, এসএমই, যুব উন্নয়ন থেকে। ই-কর্মাস ট্রেনিং নিয়েছি। ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল একটা বুটিক সপ দেব। আমার স্বামী আমার সেই স্বপ্ন পূরণ করে দিলো।কিছু টাকা আমি জমিয়েছি, আর কিছু সে জোগাড় করে লাবণ্য ক্র্যাফটস নামে একটা শো-রুম করি। সাথে একটা ছোট কারখানা। সেখানে ১০/১২ জন মেয়েকর্মী কাজ করে।
সেই আমি পল্লিমা মহিলা পরিষদ থেকে নারী উদ্যোক্তা পুরস্কার পেয়েছি। YSSE থেকে পুরস্কার। E-Club Women Forum-এ আমি এখন কো-চেয়ারম্যান। নারী উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করি। তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করি। মাঝে মাঝে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হই। কিন্তু থেমে থাকিনি।
শত প্রতিকূলের মধ্যে ধৈর্য্য ধরে টিকে থাকাই সফলতা। ধৈর্য্য, নিষ্ঠা, জেদ আর লক্ষ্য থাকলে সফলতা আসবেই। আমি কেন পারবো না। আমাকে পারতেই হবে, এই মনোভাব নিয়ে এগিয়ে গেলেই জীবনে সফলতা আসবে আসবেই। নারী হয়ে কাজ করতে গেলে অনেক বাধা আসবে। শত বাধা পেরিয়ে সামনে যেতে হবে। মোট কথা লেগে থাকতে হবে।
জয়া ইসলাম
তিনি কলেজ অব হোম ইকোনমিকসে পড়াশোনা করছেন। উডেন হ্যান্ডক্রাফটস তার প্রতিষ্ঠানের নাম।
জয়া বলেন, সত্যি কথা বলতে জব ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন কখনোই দেখিনি, স্বপ্নতো ছিল ডক্টর হওয়ার। কিন্তু ভাগ্য সহায় ছিল না। তবে, একটা স্বপ্ন ভাঙা মানে তো হেরে যাওয়া নয়, জীবনটা চ্যালেঞ্জিং! বেঁচে থাকার জন্যই তো লড়াই। এটি খুবই দুঃখজনক যে, বর্তমানে বাংলাদেশে ৩০ লাখ মানুষ বেকার। এ সংখ্যা দিনে দিনে বেড়েই চলছে, যা একটি পরিবারসহ দেশের জন্য অভিশাপ। কাজেই চাকরির আশা ছেড়ে নিজেই কিছু করার চেষ্টা করাটাই উত্তম বলে মনে করেছি। আর তাই আজ উদ্যোক্তা হতে চেয়েছি, যেন চাকরির পেছনে না ছুটে মানুষকে চাকরি দিতে পারি।
এখন ভালো আছি। নিজের খরচ নিজে চালাচ্ছি, বাবা-মাকে আমার জন্য অতিরিক্ত প্রেসার নিতে হচ্ছে না। পড়াশোনার পাশাপাশি নিজের সার্বিক যোগান নিজেই দিতে পারছি। প্রয়োজনে বাবা-মায়ের পাশে থাকতে পারছি। সন্তান হিসেবে এটাই তো জীবনের সার্থকতা, বাবা-মাও আমাকে নিয়ে গর্ব করেন। এইতো এটুকুই।
রেশমা জাহান
ইতোমধ্যে তিনি ইডেন মহিলা কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করেছেন। স্বপ্নকথা কুটির শিল্প তার প্রতিষ্ঠানের নাম।
তিনি বলেন, স্কুলে শিক্ষকতা করতাম, পরে মনে হলো উদ্যোক্তা হবো, সেই চিন্তা থেকে ২০০৯ সাল থেকে কাজ করে যাচ্ছি। বিভিন্ন ডিস্ট্রিকে গিয়ে নারীদের নিয়ে কাজ করি এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেই। আমি চাই আমাদের দেশের প্রতিটি মেয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে তুলুক। এখন নিজের ব্যবসার পাশাপাশি অসহায়দের নিয়ে সামাজিক বিভিন্ন কাজ করছি। এখন ভালো আছি।
মোসাম্মাত আমেনা বেগম
আমি স্কুল শেষ করেছি। বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠান ‘আমির টেইলারস অ্যান্ড ফেব্রিকস’ এ কাজ করছি। যখন জব করতাম সময় মেপে চলা, পরের অধীনে থাকা, কাজের নিজস্ব কোনো স্বাধীনতা নেই, শ্রম অনুযায়ী মজুরি নেই।সব কিছুই সহ্য করতে হতো। নিজের দক্ষতা দিয়ে কিছু করা, এটা মাথায় ঘুরপাক খেতো। এটা এমন না হয়ে অমন হলে ভালো হতো।
আজ উদ্যোক্তা হয়ে সব কিছু নিজের মতো করতে পারছি, আরো কিছু মানুষের কর্মসংস্থান করতে পারছি। আগে লিমিটেড সময়ে লিমিটেড আয়ের উপর চলা কঠিন হতো। এখন তা নেই, বন্দিজীবন থেকে বের হয়ে নিজেকে স্বাবলম্বী করে কাজ করতে পারছি। চাকরিজীবনের চেয়ে এখন অনেক ভালো আছি।
For You, With You, For Ever….
সমাহার ডট নেট-এর পণ্য সামগ্রী ও সেবা পেতে রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
- অ্যাপ, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ডোমেইন হোস্টিং রেজিস্টেশন করা হয়।
- নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ফ্যাশন, পারফিউম, মেডিসিন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, টিভি, ক্যামেরা, মোটরবাইক, আসবাবপত্র, এপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপাটির পাশাপাশি জমি ও প্লট সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য নিবেদিত বিভিন্ন রকমের সার্ভিসগুলো দেয়া হয়।
- আমাদের রিসেলার হয়ে অবসর সময়ে বিনিয়োগ ছাড়া, দৈনিক শুধু ৩-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে নিশ্চিত পেসিভ ইনকাম করুন। ৬/৭ মাস নিয়মিত সময় দিলে অবশ্যই মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকামের নিশ্চয়তা রয়েছে।
- আকর্ষণীয় কমিশনে ডিলার, এজেন্ট ও সেলার সেন্টার দেয়া হচ্ছে…
এছাড়াও আপনি আপনার ব্যবসার জন্য ট্রেডিশনাল মার্কেটিং অথাৎ সরাসরি আপনার ব্যবসার প্রচার করাতে চাইলে। সমাহার ডট নেট এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেখান থেকে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য খুবই কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা ট্রেডিশনাল মার্কেটিং করাতে পারবেন। এছাড়া ও সমস্ত প্রকার ডিজিটাল অথবা ট্রেডিশনাল সুবিধা নিতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার ব্যবসাকে কি ভাবে অনলাইনে নিয়ে যাবেন বা ব্যবসাকে বড় করবেন অথাৎ ব্যবসার প্রসার ঘটাবেন তা জানতে চান তবে , সময় নষ্ট না করে এখুনি রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন। তার জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রীতে আপনি পরামর্শ পাবেন।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দরকারী কিছু তথ্য দিয়েছে। পরবর্তী পোস্ট পাওয়ার জন্য সাথেই থাকুন
কিশোরী বধূ থেকে সফল নারী উদ্যোক্তা
পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষ নিরিবিলি জীবন যাপন করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। সমাজের অধিকাংশ নারী-ই অনেক ক্ষেত্রে রক্ষণশীলতার অজুহাতে আবার কেউ নিরাপত্তার অজুহাতে নিজেকে গুঁটিয়ে রেখেই স্বস্তি পান। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও আছে। যারা বাধাকে ডিঙিয়ে আনন্দ পান। প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছতে চান।
পাঠক, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের এই দিনে আমরা এমন একজন নারীর গল্প বলবো যিনি জীবনের পরতে পরতে লড়াই করে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি দৃঢ় মনোবল, সাহস, বুদ্ধি ও পরিশ্রমের সমন্বয়ে নিজেই গড়েছেন নিজের জগত। হ্যাঁ, তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীর।
হেলেনা জাহাঙ্গীর একজন ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা। সমাজসেবী হিসেবে তার স্বীকৃতি দেশের সীমানা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছেছে অনেক আগেই। পাশাপাশি টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব হিসেবে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই-এর পরিচালক তিনি। জড়িত রয়েছেন ব্যবসায়ী সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমই, এনসিসিআই, এনএএসসিআইবি, গুলশান ক্লাব, গুলসান নর্থ ক্লাব, বারিধারা ক্লাব, কুমিল্লা ক্লাব, গলফ ক্লাব, গুলসান অল কমিউনিটি ক্লাব, বিজিএমইএ অ্যাপারেল ক্লাব, বোট ক্লাব, গুলসান লেডিস ক্লাব, উত্তরা লেডিস ক্লাব, গুলসান ক্যাপিটাল ক্লাব, গুলসান সোসাইটি, বনানী সোসাইটি, গুলসান জগার্স সোসাইটি ও গুলসান হেলথ ক্লাবে। নিজের হাতে প্রতিষ্ঠিত জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন নিয়ে দেশের মাঠ ঘাট চষে বেড়ালেও সিআইএস- বিসিসিআই, রোটারী, ইন্টারন্যাশনাল জোন্টা ক্লাব, ইন্টারন্যাশনাল ইনার হুইল ক্লাব, বাংলাদেশ ক্রীড়া সাংবাদিক সমিতি, আমরা সবাই ফাউন্ডেশন- এর মাধ্যমেও সমাজ সেবায় ভূমিকা রাখছেন।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে একুশে টেলিভিশন অনলাইন মুখোমুখি হয়েছিল তার। হেলেনা জাহাঙ্গীর শুনিয়েছেন তার জীবনের গল্প। বলেছেন, লড়াই করে উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প। এদেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের উদ্যোক্তাদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা বলেছেন। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো কেমন ভূমিকা রাখছে তাও উঠে এসেছে তার আলাপচারিতায়। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে নারীকে নিয়ে আমাদের সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি।
সাহসী হেলেনা জাহাঙ্গীর দাবি করেছেন, এদেশের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা জাতির জন্য আশীর্বাদ। দেশকে পৃথিবীর উন্নত রাষ্ট্রগুলোর কাতারে নেওয়ার জন্য শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। পাশাপাশি এটাও বলেছেন, অধিকাংশ রাজনীতিবিদ ও জনপ্রতিনিধির মধ্যে সততার অভাব রয়েছে।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রতিবেদক আলী আদনান। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
প্রতিবেদক: আজকে উদ্যোক্তাদের মাঝে, সমাজসেবীদের কাছে হেলেনা জাহাঙ্গীর একটি অনুপ্রেরণার নাম। কীভাবে এই জায়গায় এলেন। উঠে আসার গল্প বলুন।
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ আমি বড় হয়েছি চট্টগ্রামে। পড়তাম কৃষ্ণচূড়া স্কুলে। আমাদের বাসা ছিল হালিশহর, মাদারবাড়ী, সদরঘাট এসব এলাকায়।আমার বাবা মরহুম আবদুল হক শরীফ সাহেব জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিলেন। আমি খুব চঞ্চল ও দুরন্ত ছিলাম ছোটবেলা থেকে। একপর্যায়ে বাবা অলিম্পিক কোম্পানী থেকে ভালো একটা প্রস্তাব পেয়ে আফ্রিকায় গেলেন। মা আমাদেরকে নিয়ে গ্রামে ফিরে এলেন। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি।
সাধারণত যেটা হয় শহরের কোনো সুন্দর মেয়ে গ্রামে এলে গ্রামের বখাটেরা নানা ধরণের উৎপাত করে। তখনো করত। নানাভাবে প্রেম প্রস্তাব দেওয়া, দেওয়ার চেষ্টা করা ইত্যাদি। সত্যি কথা হচ্ছে, আমাদের পরিবারটা প্রভাবশালী পরিবার ছিল। কেউ তেমন একটা সাহস করতো না। এরপরও মায়ের চোখে ব্যপারটা পড়ে গেল। তখন নানা দিক থেকে ভাল ভাল বিয়ের প্রস্তাবও আসছিল। বিয়ে হয়ে গেল। ১৯৯০ সালের ৫ অক্টোবর আমাদের বিয়ে হয়।
প্রতিবেদক: এত অল্প বয়সে বিয়ে। সেখান থেকে উঠে এলেন কিভাবে?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ আমি ভাগ্যবান। আমার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম আমাকে প্রেরণা যুগিয়েছেন। আমাদের তিন সন্তান। আমার স্বামী তার তিন সন্তানকে যেভাবে যত্ন নেন, আমার যত্নটাও ঠিক একইভাবে নেন। আমি আমার অভিজ্ঞতায় শিখেছি, পেশাগত জীবনে তিনিই সফল, যিনি দাম্পত্য জীবনে ও সাংসারিক জীবনে সফল হবেন। স্বামী- স্ত্রীর ভাল বোঝাপড়া খুবই জরুরি।
প্রতিবেদক:একুশে টেলিভিশন অনলাইনঃ ব্যবসায়ী হলেন কীভাবে?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ আগেই বলেছি, আমি ছোট থেকেই খুব দুরন্ত ছিলাম। সবকিছুর প্রতি আমার তীব্র কৌতুহল ছিল। বড় বড় লেখকের লেখা পড়তাম। বিভিন্ন বিষয় নিজে লেখার চেষ্টা করতাম। তেমনি নিজে কিছু করার তাগিদ থেকে চাকরি খোঁজা শুরু করি। এখানে বলা হয়নি, ক্লাস এইটে পড়া অবস্থায় বিয়ে হলেও বিয়ের পরে নিজের চেষ্টায় পড়ালেখা চালিয়ে যাই। আমাকে আমার স্বামী খুবই সাপোর্ট দিয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় নিজ তাগিদে চাকরি খোঁজা শুরু করি। বিভিন্ন জায়গায় ইন্টারভিউ দিচ্ছি। এ অবস্থায় একদিন আমার হাজবেন্ডের অফিসে যাই। নারায়ণগঞ্জে। তার অফিসে গিয়ে আমি একটা ধাক্কা খাই। অফিসের ইন্টেরিয়র ডিজাইন, তার রুম, বসার চেয়ার, প্রভাব- আসলে এতকিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না।বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এমডির অফিস যেমন হয়, তেমনটাই। আমি তখন ভাবলাম আমি যদি কোথাও চাকরি করি, তাহলে আমি ছোট হয়ে যাবো। তাহলে কী করা যায়? হুঁ, ভাল উপায় হচ্ছে নিজে কিছু করা। নিজের মতো করে নিজের একটা জগৎ তৈরী করা। এরমধ্যে ডিগ্রী পাস করলাম। আমাদের প্রথম সন্তানও এর মধ্যে এসেছে।
প্রতিবেদক: যাত্রাটা কেমন ছিল?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ ব্যবসায়ের প্রতি তখন আমার আগ্রহটা এত বেশি ছিল, আমি ব্যবসা সম্পর্কে প্রচুর খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করলাম। এই ঢাকা শহরে বিভিন্ন অফিস ভিজিট করা শুরু করলাম। আসলে মানুষের মধ্যে কাজের ক্ষুদা থাকতে হয়। সেই ক্ষুদাটা আমার ছিল। আমার স্বামীর সঙ্গে আলাপ করলাম। বললাম, আমি কিছু করতে চাই। তিনি আমাকে যথেষ্ট গাইড করলেন। মিরপুরে তিনি আমার খালাতো ভাইয়ের সঙ্গে একটা ফ্যাক্টরি করেছিলেন। কিন্তু আমি শেয়ারে ব্যবসা করতে আগ্রহী ছিলাম না। তখন মিরপুর ১১- এ একটা ভবনের কয়েকটা ফ্লোর নিয়ে কাজ শুরু করি। পেইন্টিং বিজনেস। বিদেশ থেকে মেশিন নিয়ে এসেছিলাম। নিয়ম মেনে প্রচুর পরিশ্রম করতাম। সকাল সাতটায় অফিসে আসতাম। এরপর অল্প সময়ে ধীরে ধীরে ব্যবসার পরিধি বাড়াতে লাগলাম। ঢাকা শহরের অধিকাংশ অফিস ভিজিট করার যে অভিজ্ঞতা তা ব্যবসায় আমাকে খুব কাজে দিয়েছিল।
প্রতিবেদক: প্রতিবন্ধকতার অভিজ্ঞতা কেমন?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ (হেসে) প্রতিবন্ধকতা তো থাকবেই। মিরপুরে যখন ব্যবসা শুরু করলাম তখন দল বেঁধে অনেকে এল। চাঁদা চায়। ব্যবসা চায়। তবে তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি। আমি ওদের মোটিভেট করে ফেললাম। পরে অবশ্য ওরা আমার বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করত। কিন্তু আমি আর ঝুঁকি নিইনি। এরপর আমি আমার সব ফ্যাক্টরি গুছিয়ে নারায়ণগঞ্জ নিয়ে যাই।
প্রতিবেদক: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কতোটা উপযোগী?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ আমাদের পর্যায়ে উদ্যোক্তাদের মধ্যে ১৩% নারী। বাকি ১৭% পুরুষ। সেই বিবেচনায় সংখ্যাটা সন্তোষজনক না। আমাদের পোষাক শ্রমিকদের মাঝে অর্ধেকেরও বেশি নারী। সাধারণত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীতে নারীরা বেশী পরিশ্রমী হয়। অর্থনৈতিক সঙ্গতির কথা চিন্তা করে তাদের পরিবার বা স্বামী সেখানে নারীদের কাজ করতে বাধা দেয় না। বরং উৎসাহ যোগায়। পক্ষান্তরে উচ্চ মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত সমাজে আভিজাত্যের নামে নারীদের কর্মবিমুখ করে রাখা হয়। যেহেতু পারিবারিকভাবে আর্থিক অস্বচ্ছলতা নেই- সেহেতু সেখানে অনেক নারী নিজে কিছু করার চেষ্টায় উৎসাহী হয় না। এটা ইতিবাচক দিক নয়। আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অবদান শ্রদ্ধার দাবি রাখে। নারী উদ্যোক্তা বা ব্যবসায়ীরা পুরুষদের তুলনায় সৎ। ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করছে, দুর্নীতি করছে এমন অভিযোগ কোনো নারী ব্যবসায়ীর নামে সচরাচর পাওয়া যায় না। তারা যথেষ্ঠ পরিশ্রমী। সুযোগ পায় না। কিন্তু সুযোগ পেলে সুযোগের সদ্ব্যবহারে তারা সচেষ্ট।
প্রতিবেদক: তৃণমূলে নারী উদ্যোক্তাদের সাধারণত কী কী সমস্যায় পড়তে হয়?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ আমাদের দেশে তেলে মাথায় তেল দেওয়া হয়। আমি হেলেনা জাহাঙ্গীর আমার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থানের কারণে যেসব সুবিধা সহজে পাই- একজন তৃণমূল উদ্যোক্তা কিন্তু তা সহজে পায় না। নানা ধরনের জটিলতা তাকে প্রতিনিয়ত মোকাবেলা করতে হয়। টেবিলে টেবিল তার ফাইল ঘুরে। নানা অজুহাত দেখানো হয়। আমি মূলত এ বিষয়গুলো নিয়ে জনসচেতনতামূলক কাজ করছি। তৃণমূল উদ্যোক্তাদের নানা কথা শুনছি। তাদের কাউন্সিলিং করছি। উৎসাহী করছি।
প্রতিবেদক: রাজনীতি নিয়ে কিছু ভাবছেন কি না?
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ আমি যে প্ল্যাটফর্মগুলোতে কাজ করছি, সেখান থেকে মানুষের সঙ্গে সরাসরি মেশা যায়। মানুষের সুখ দুঃখে অংশীদার হওয়া যায়। আশপাশে অনেক এমপি মন্ত্রী দেখি যারা সেই সুযোগ পান না। এদেশের এমপিরা ভোগবাদী। অধিকাংশ এমপি শুধু নিতে জানে। দিতে জানে না। খেয়াল করলে দেখবেন, এমপি হওয়ার আগে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা থাকে একরকম। পাঁচ বছর যখন বিদায় নেন, তখন অর্থনৈতিক অবস্থা ফুলে ফেঁপে দেখার মতো।
আজকের বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিকল্প নেই। বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের লড়াইয়ে তিনি এক অবিসংবাদিত নেতা। আমি তার স্নেহ পেয়েই খুশি। তিনি আমাকে দেশের প্রয়োজনে যা করার নির্দেশ দিবেন আমি তাই করব।
প্রতিবেদক: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ও নারী দিবসের শুভেচ্ছা।
হেলেনা জাহাঙ্গীরঃ পৃথিবীর সব বঞ্চিত নারী পথ খুঁজে পাক, সেটাই প্রত্যাশা।
For You, With You, For Ever….
সমাহার ডট নেট-এর পণ্য সামগ্রী ও সেবা পেতে রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন।
- অ্যাপ, সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট, ডিজিটাল মার্কেটিং ও ডোমেইন হোস্টিং রেজিস্টেশন করা হয়।
- নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ফ্যাশন, পারফিউম, মেডিসিন, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, টিভি, ক্যামেরা, মোটরবাইক, আসবাবপত্র, এপার্টমেন্ট, বাণিজ্যিক এবং আবাসিক প্রপাটির পাশাপাশি জমি ও প্লট সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ ভোক্তাদের জন্য নিবেদিত বিভিন্ন রকমের সার্ভিসগুলো দেয়া হয়।
- আমাদের রিসেলার হয়ে অবসর সময়ে বিনিয়োগ ছাড়া, দৈনিক শুধু ৩-৪ ঘন্টা সময় দিয়ে নিশ্চিত পেসিভ ইনকাম করুন। ৬/৭ মাস নিয়মিত সময় দিলে অবশ্যই মাসিক ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা ইনকামের নিশ্চয়তা রয়েছে।
- আকর্ষণীয় কমিশনে ডিলার, এজেন্ট ও সেলার সেন্টার দেয়া হচ্ছে…
এছাড়াও আপনি আপনার ব্যবসার জন্য ট্রেডিশনাল মার্কেটিং অথাৎ সরাসরি আপনার ব্যবসার প্রচার করাতে চাইলে। সমাহার ডট নেট এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। যেখান থেকে আপনি আপনার ব্যবসার জন্য খুবই কম খরচে ডিজিটাল মার্কেটিং অথবা ট্রেডিশনাল মার্কেটিং করাতে পারবেন। এছাড়া ও সমস্ত প্রকার ডিজিটাল অথবা ট্রেডিশনাল সুবিধা নিতে পারবেন।
আপনি যদি আপনার ব্যবসাকে কি ভাবে অনলাইনে নিয়ে যাবেন বা ব্যবসাকে বড় করবেন অথাৎ ব্যবসার প্রসার ঘটাবেন তা জানতে চান তবে , সময় নষ্ট না করে এখুনি রিসেলার, সেলার সেন্টারে সরাসরি যোগাযোগ করুন। তার জন্য আপনাকে কোনো টাকা খরচ করতে হবে না। সম্পূর্ণ ফ্রীতে আপনি পরামর্শ পাবেন।
আশা করি এই পোস্টটি আপনাকে দরকারী কিছু তথ্য দিয়েছে। পরবর্তী পোস্ট পাওয়ার জন্য সাথেই থাকুন
নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে বিশ্বের শীর্ষ দশে বাংলাদেশ
নারী উদ্যোক্তা তৈরির ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। ব্যবসার মোট মালিকদের মধ্যে নারীর সংখ্যা হিসেবে ৫৪টি দেশের মধ্যে ৬ নম্বরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
‘মাস্টারকার্ড ইনডেক্স অব উইমেন আন্ত্রেপ্রেনিউরস (এমআইডব্লিউই)’ শীর্ষক এ জরিপে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
সেখানে বলা হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে যত উদ্যোক্তা আছেন, তার ৩১.৬ শতাংশই নারী। বাংলাদেশে নারীদের উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার মতো এখনো যথেষ্ট উপযুক্ত পরিবেশ নেই। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশের মধ্যেই কাজ করে এ দেশের নারীরা নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলছেন।
জরিপের ফলাফলে উল্লেখ করা হয়েছে, উগান্ডা (নারী উদ্যোক্তা ৩৪.৮%), বাংলাদেশ (৩১.৬%) এবং ভিয়েতনামের (৩১.৪%) মতো স্বল্প আয়ের অর্থনীতির দেশগুলোতে নারীরা ব্যবসার সুযোগ পেয়ে নয়, মূলত প্রয়োজনের তাগিদেই উদ্যোক্তা হন। তাই ব্যবসার যে কোনো ধরণের সুযোগ পেলেই বাংলাদেশসহ এসব নারীরা সেটা কাজে লাগান।
জরিপে বলা হয়েছে, উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে একজন নারীর জন্য যেসব সুবিধা অত্যাবশ্যক, তার মধ্যে সবচেয়ে জরুরি হলো আর্থিক সহায়তা ও ব্যবসা করার সহজ পরিবেশ। অন্যদিকে নারীদের ব্যবসা করার পথে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে আর্থিক সহায়তার অভাব, আত্মবিশ্বাস ও উদ্যোক্তা প্রবণতার অভাবকে।
এছাড়া ওই জরিপ অনুসারে, নারী উদ্যোক্তাদের গড়ে ওঠার মতো উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ তৈরিতে সবচেয়ে এগিয়ে আছে নিউজিল্যান্ড (নারী উদ্যোক্তা ৭৪.৪%)।
সেরা ১০টি দেশের মধ্যে বাকিগুলো যথাক্রমে কানাডা (নারী উদ্যোক্তা ৭২.৪%), যুক্তরাষ্ট্র (নারী উদ্যোক্তা ৬৯.৯%), সুইডেন (নারী উদ্যোক্তা ৬৯.৬%), সিঙ্গাপুর (নারী উদ্যোক্তা ৬৯.৫%), বেলজিয়াম (নারী উদ্যোক্তা ৬৯.০%), অস্ট্রেলিয়া (নারী উদ্যোক্তা ৬৮.৫%), ফিলিপিন্স (নারী উদ্যোক্তা ৬৮.৪%), যুক্তরাজ্য (নারী উদ্যোক্তা ৬৭.৯%) এবং থাইল্যান্ড (নারী উদ্যোক্তা ৬৭.৫%)।