ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ে ক্রিয়েটিভ মার্কেটিং কৌশল

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের বিনিয়ােগ যেমন সীমিত তেমনি তাদের মাকেটিং বাজেটও বেশি নয়। একটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের বিপণনের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো একটি উত্তম বৃত্তাকার কর্মসূচি তৈরি করা, যা বিক্রয় কার্যক্রমকে বিপণনেয় সাথে সংযুক্ত করে। পুরাে সার্কেলটি বা চক্রটি সম্পন্ন হতে লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ হবে। ক্রিয়েটিভ মাকেটিং যে শুধু আমাদের বিপণনের ব্যয় কমাবে তা নয়, এটা সম্ভাব্য গ্রাহক এবং ক্লায়েন্টদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে কোনাে কোম্পানির ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরিতে সাহায্য করে। সৃজনশীলতা একদিনের বিষয় নয়, এটা ধীরে ধীরে বিকাশ লাভ করে। যে কোনাে চিন্তার মানুষ তার সৃজনশীলতাকে উন্নত করে নিতে পারেন। হয়তাে প্রতিটি মানুষ চাইলে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সৃজনশীলতা লাভ করতে পারে না। কিন্তু যে যেখানে রয়েছেন সে অবস্থা থেকে প্রভূত উন্নয়ন করা যায়। আর

তার জন্য যেসব নিয়ামক কাজ করে সেগুলাে নিম্নরূপ :

তথ্য সংগ্রহ Data Collection

তথ্য সংগ্রহ সৃজনশীলতা উন্নয়নের প্রথম ধাপ। আধুনিক যুগে তথ্য পাওয়া সহজ আবার কঠিন। তথ্য কোথাও রয়েছে, আবার কোথাও নেই। চ্যালেঞ্জটা হলাে বাছাই করে তথ্য গ্রহণ করা। তথ্য সাজানাে এবং প্রয়ােজনীয় তথ্য সংরক্ষণ আর তথ্যের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী মার্কেটিং প্লান ঠিক করা কিংবা নতুন কোনাে আইডিয়ার কথা চিন্তা করা।

সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা আয়/Supplemental Security Income (SSI)

ভালাে বিপণন ও বিক্রয় কৌশল ছাড়া বাজারজাতকরণে সফল হওয়া সম্ভব নয়। প্রথমত আমাদের গ্রাহক এবং তাদের চাহিদা ও আকাক্ষা সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। প্রতিটি পণ্য বা সেবার যে উপযােগ আছে, সেটা গ্রাহকের সাথে কোথায় সংযুক্ত করছে বা কোন জায়গায় গ্রাহকের অভাব আর ঠিক
কোন অভাবটি পূরণের যােগ্যতা রয়েছে প্রাক্কলিত পণ্যের, সেটা যথাযথভাবে নিশ্চিত করে সে বার্তাটি প্রমােশনের মাধ্যমে ভােক্তার কাছে পৌছে দিতে হয়।
এজন্য প্রয়ােজন :

১. বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ/ Market Analysis

বাজারে আমাদের ব্যবসায়ের অবস্থান মূল্যায়ন করার জন্য কেবল আমাদের পণ্য সম্পর্কে জানলে হবে না, প্রতিযােগিতামূলক পরিবেশ, বিকল্প পণ্য, প্রতিযােগীর অবস্থান এবং আর্থসামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রবণতা সম্পর্কে জানতে হবে। বাজার গবেষণা শুধু বড়াে কোম্পানিগুলাে করবে তা নয়। ছােটো কোম্পানির জন্য ছােটো পরিসর বাজারের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা যায়।

২. পণ্য উন্নয়ন/ Product Development

আমাদের ব্যবসায় অবশ্যই এমন পণ্য বা পরিষেবাগুলাে সবসময় আরাে উন্নত এবং সংশােধনের পর নতুন ফিচার যুক্ত করে বাজারজাত করতে পারি। যদি এমন হয় যে, সেগুলাে বর্তমান ফিচারেও দারুণ তবু সেগুলাে উন্নত করতে হবে। এটাও সৃজনশীলতা। অনেক সময় আমরা মনে করি, প্রথমবার বিক্রি হওয়ার পর কাস্টমারের সাড়া দেখে তারপর পণ্যগুলােকে আরাে
উন্নত করা যাবে। কিন্তু সত্যি কথা হলাে, সৃজনশীলতার দাবি অনুসারে প্রথমবার বিক্রির আগেও আমরা চাইলে পণ্যটিকে উন্নত করার সুযােগ থাকলে তা প্রয়ােগ করতে পারি। নােকিয়ার বাজার ভালাে ছিল বলে পণ্য উন্নয়নে ততটা গতিশীল ছিল না। যার ফলে আজ নােকিয়া কতটা পিছিয়ে গেছে!

৩. মূল্য নির্ধারণ/ Pricing & Packaging

পণ্য সংগ্রহ ও উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে বাজার পরিস্থিতি ও ক্রেতার দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করা হয়। পণ্য বাজারজাতকরণে কীভাবে অফারগুলাে তৈরি হবে এবং তা কীভাবে উপস্থাপন করা হবে ভােক্তার কাছে, সেগুলাের গ্রহণযােগ্যতার ব্যাপারে আগেই হােমওয়ার্ক করা ভালাে। যখন কোনাে প্যাকেজ
করি তা ভােক্তার কথা মাথায় রেখে করতে হয়। কারণ তার ওপর নির্ভর করছে সাফল্য। ভাবছেন লাভ-ক্ষতি হিসাব করে পণ্যের দাম ঠিক করব। এখানে আবার সৃজনশীলতা কিসের? আছে গাে, আছে। কখনাে যদি ২০% ক্যাশব্যাক অফার দিতে হয় বা বিশেষ কোনাে অফার? সেটাও মাথায় রাখতে হবে।

কার্যকর বিতরণ প্রক্রিয়া নির্বাচন/ Choosing effective distribution methods

যখন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খুব চ্যালেঞ্জিং থাকে, তখনাে পণ্য বা সেবা গ্রাহকের কাছে অন্য সময়ের মতাে সঠিক সময় ও মানদণ্ড অনুসারে পৌছে যাবে। বাইরের আর্থিক মন্দা কিংবা কোম্পানির দুর্বলতা সার্ভিস বা প্রােডাক্টের
মধ্যে পরিলক্ষিত হবে না। এই চ্যালেঞ্জটা বেশিরভাগ সময় সৃজনশীলতা দিয়ে মােকাবিলা করতে হয়। সৃজনশীল উপায় বের করে সংকটের সমাধান একজন
সৃজনশীল মার্কেটারকে তার কোম্পানির জন্য সফল করে তােলে। এই প্রক্রিয়া কী হবে সেটা অনেক কিছুর ওপর নির্ভরশীল।

ক্রেতামুখী প্রমােশন উন্নয়ন Customer base promotion buildup

বাজারে প্রবেশ এবং বাজার দখলের জন্য প্রয়ােজন হয় পণ্যের প্রােফাইল তৈরি আর সেটাকে গ্রাহকের কাছে তুলে ধরতে প্রয়ােজন প্রমােশন। একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর ক্ষেত্রে তার সম্ভাব্য গ্রাহকের কাছে পণ্য বা সেবা পৌছানাের জন্য জনসংযােগ ব্যবহারে সৃজনশীলতা বড়াে বেশি দরকার। তা না হলে গতানুগতিক ব্যবস্থায় তার পক্ষে প্রতিযােগিতা চালানাে সবসময় সহজ হয় না।

দীর্ঘমেয়াদি বাজারজাতকরণ পরিকল্পনা/long-term marketing plan

সফল হওয়ার জন্য জানতে হবে চলার পথ কোনদিকে? তাই বাজারজাতকরণ পরিকল্পনা তৈরির জন্য যতগুলাে ধাপ ও উপাদান রয়েছে,সে সব কার্যাবলির সমন্বয় সাধন প্রয়ােজন হয় যাতে প্রয়ােজন ও গুরুত্ব অনুসারে প্রয়ােগের সময় ঠিকভাবে পাওয়া যায়, যা সফলতার পথকে ত্বরান্বিত করে।

বাজারজাতকরণে নতুনত্ব আনা/Apply New Strategy

বাজারে এত এত পণ্যের কত কত বিজ্ঞাপন। এসব শত শত অফারের ভিড়ে আপনার অফারটি পাবলিককে গেলাতে হলে সেটা কতটা নতুন, আলাদা আর চমকপ্রদ হতে হবে। ভাবতে থাকুন—ভাবতে থাকুন।

ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের বাজারজাতকরণ পরিকল্পনার ধাপগুলাে নিম্নরূপ :
১. বাজার গবেষণা (Market Research)
২. বাজারজাতকরণ মিশ্রণ (Marketing Research)
৩. পণ্যের সজীব জীবনচক্রকে কাজে লাগানাে (Using Product Life Cycle)
৪. কার্যকর প্রচার কৌশল (Effective Promotion Techniques)
৫. সঠিক ও মিতব্যয়ী উপায়ে বিতরণ (Low Costing Channels of Distribution)

Steps of Service Development
Step 1: Idea about what service you are going to provide
Step 2: Choosing the Ideal Idea
Step 3: Understanding the Customer Demand of the Idea
Step 4: Analyzing the idea from business point-of-view
Step 5: Developing a Prototype of the service
Step 6: Testing the Idea
Step 7: Marketing Plan
Step 8: Introducing the Service to the Market

সৃজনশীল বাজারজাতকরণ বা ক্রিয়েটিভ মার্কেটিংকে ফলদায়ী করতে প্রতিটি ব্যবসায়ের জন্য পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর দেয়া জরুরি—
১. কোনদিক থেকে আপনার ব্যবসায়িক ধারণা অনন্য বা অন্যদের চেয়ে আলাদা?
২. আপনার কাঙ্ক্ষিত ভােক্তা কারা? বর্তমানে আপনার পণ্য কারা কিনছে? সত্যিকার অর্থে কাদের কাছে পণ্যটি নিয়ে যেতে চান?
৩. আপনার পণ্য বা পরিষেবার ক্ষেত্রে কারা আপনার প্রতিদ্বন্দ্বী? তাদের সাথে কি আপনি প্রতিযােগিতায় টিকে থাকতে পারবেন?
৪. আপনি কি আপনার কাঙ্ক্ষিত ক্রেতাদের সাথে কোনাে ধরনের বার্তা দিয়ে যােগাযােগ করতে চান?
৫, আপনার বিতরণ কৌশল কী? আপনি কীভাবে আপনার গ্রাহকদের হাতে আপনার পণ্য বা পরিষেবা পৌঁছে দেবেন?
#সস্তায়_নয়_আস্থায়_বিশ্বাসী

নিশ (niche) বলতে কি বোঝায়?

ডিজিটাল মার্কেটিং এর সাথে যারা যুক্ত বা যাদের অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং টার্মটা সম্পর্কে ধারণা আছে, তাদের কাছে খুবই পরিচিত একটি শব্দ হচ্ছে “নিশ”।
মার্কেটিং এর ভাষায়, আপনি যখন শুধুমাত্র একটি নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট নিয়ে, একটি নির্দিষ্ট কোনো জনগোষ্ঠীর, নির্দিষ্ট একটি চাহিদা পূরণ করার উদ্দেশ্যে ঐ প্রোডাক্টের বানিজ্যিকভাবে প্রোমোশন করবেন তখন সেটাকে বলা হয় “নিশ মার্কেটিং”।
আর যে প্রোডাক্ট টি নিয়ে বা ঐ নির্দিষ্ট প্রোডাক্টের বিশেষ যে ধরণটি নিয়ে আপনি কাজ করবেন তাই আপনার নিশ।
অন্যভাবে বলতে পারি,
নিশ বলতে আমরা বুঝি কোনো একটি টপিক বা ক্যাটাগরি। আপনি মূলত কি নিয়ে কাজ করতে চাচ্ছেন সেটাই হচ্ছে নিশ। যেমন ধরুন আপনি হেলথ্ অ্যান্ড ফিটনেস সম্পর্কে খুব ভালো জানেন এবং এটা নিয়ে ব্লগ তৈরি করতে চাচ্ছেন এবং অবশ্যই টাকা ইনকাম বা মার্কেটিং করতে চাচ্ছেন তাহলে এই হেলথ অ্যান্ড ফিটনেসই হবে আপনার নিশ।
এখন প্রতিটি নিশ এর ভেতর আবার সাব-নিশ আছে।
সেটা কেমন ?
আপনি যখন হেলথ্ অ্যান্ড ফিটনেস নিয়ে কাজ করবেন তখন এই নিশটি অনেক বিশাল একটি টপিক। এই হেলথ্ অ্যান্ড ফিটনেস এর ভেতর অনেক সাব ক্যাটাগরি আছে যেমন হতে পারে স্কিন কেয়ার, ওয়েট লস, বডি বিল্ডিং ইত্যাদি। এগুলোকে বলা হয় সাব-নিশ।
চলুন একটি উদাহরণের মাধ্যেম বিষয়টিকে আরো সহজভাবে দেখি।
ধরুণ আপনি বাংলাদেশে ‘X’ নামের সাবানের মার্কেটিং প্রমোশন করবেন। আপনি ডাটা এনালাইসিস করে দেখলেন ৯০% মানুষ সাবান ব্যবহার করে (ধরি বাকি ১০% করে না, তাদের হয়তো সাবান কেনার সামর্থ্যই নেই)।
তো এই ৯০% মানে ধরে নেই ১৭ কোটি মানুষ।
এখন এই ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে আবার ৭০% লোক সাবান ব্যবহার করে শুধুমাত্র শরীরের ময়লা পরিষ্কার করার জন্য, ১৫% লোক ব্যবহার করে শুধুমাত্র শরীরের দূর্গন্ধ দূর করার জন্য, ১০% ব্যবহার করে শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য আর বাকি ৫% ব্যবহার করে বিলাসিতার জন্য বা শৌখিনতার জন্য (অনেক হাই রেটেড ফরেইন প্রোডাক্ট)।
এখন আপনি ঠিক করলেন আপনি ওইসব মানুষদের টার্গেট করবেন যারা সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সাবান ব্যবহার করে। মানে বিউটি সোপ।
তার মানে আপনি ওই ১০% মানুষের কাছেই শুধু মার্কেটিং করবেন। আর এই ১০% ই হলো আপনার “নিশ টার্গেট মার্কেট”।
আর এই ১০% এর জন্য যদি আপনি একটা প্রোডাক্ট অফার করেন, যেমন ‘X’ বিউটি সোপ, তাহলে এই প্রোডাক্টটাই হলো আপনার “নিশ”।

ওয়েবসাইট কি আসলেই ফেসবুকের বিকল্প, সামনের দিন গুলোতে ফেসবুকের বিকল্প হিসেবে কি করা যেতে পারে ? ( ১ম পর্ব )

ওয়েবসাইট কি আসলেই ফেসবুকের বিকল্প, সামনের দিন গুলোতে ফেসবুকের বিকল্প হিসেবে কি করা যেতে পারে ? ( ১ম পর্ব )

কিছুদিন আগে সংগত কারনে ফেসবুক ডাউন করে দেয়া হয়েছিল, এতে ভোগান্তির স্বীকার হয়েছিল এফ কমার্স এর সাথে জড়িত সবাই। তার পরও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একমাত্র বিজনেস মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম ফেসবুক। এর পিছনে অনেক গুলো কারন আছে।

ℹ ১। বাংলাদেশের প্রচুর পরিমান ফেসবুক ইউজার।
ℹ ২. বাংলাদেশের অনেকেই নেট বলতে ফেসবুক কেই বুঝে।
ℹ ৩। উঠতি জেনারেশন বা কাস্টমার অডিয়েন্স সবাই কম বেশি ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে।
ℹ ৪. ফেসবুকের ব্যবহারের কারন অনেক বেশি, মুলত শুধু সোশ্যাল মিডিয়া হিসেবে নয়, অনেকের কাজের জায়গা এখন ফেসবুক, যেমন যারা এফ কমার্সের সাথে জড়িত তারা মুলত ফেসবুকে চ্যাটিং করতে আসে না, তারা আসে তাদের পন্যের প্রচার করতে এবং ব্যবসার কার্যক্রম পরিচালনা করতে।
ℹ ৫. আলাদা ভাবে সোশ্যাল মিডিয়ার ডাটা কিনতে পাওয়া যায়, যা শহরের বাইরে কম দামে ফেসবুকে আসার একটা মাধ্যম।
ℹ ৬. যোগাযোগের একটা মাধ্যম হচ্ছে ফেসবুক, ভয়েস কল থেকে শুরু করে পড়াশুনার কার্যক্রম সব এখন ফেসবুক গ্রুপ।
এত এক্টিভিটি মুলত অন্যান্য কোন প্ল্যাটফর্মে নেই, তাই একমাত্র ফেসবুকের মাধ্যমেই বাংলাদেশের প্রায় ৮৮% ভাগ উদ্যক্তা ফেসবুক মুখি।

এছাড়া আরো কিছু কারন আছে,

☑ ১। ফেসবুক পেজ খুলতে কোন অর্থ খরচ হয় না।
☑ ২। সহজেই পেজ মেনেজ করা যায়।
☑ ৩। সহযোগিতা করার মত অনেকেই আছেন।
☑ ৪।। ব্যবসার শুরু করতে মোটামুটি তুলনামুলক খরচ কম হয়, যেহেতু পেইড মার্কেটিং ছাড়া এখানে খরচ বলতে গ্রাফিক্স, পেজ অপ্টিমাইজেসন, কনটেন্ট এবং মার্কেটিং চার্জ।

? এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সব কিছু ফেসবুকে থাকা সত্তেও, এর বিকল্প হিসেবে কোন টাকে বেছে নেয়া যায় ?

সত্যিকার অর্থে একটা প্রশ্ন করে উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।

? ১. আপনার ব্যবসা আপনি কোথায় নিয়ে যেতে চান ৬ মাস পড়ে ?
? ২. আপনি কি আজিবন ফেসবুকেই আপনার পণ্যের মার্কেটিং করতে চান ?
? ৩. আপনি কি ফেসবুককে জাস্ট মাস শেষে কিছু ইনকাম আসবে এই জন্য ব্যবহার করতে চান?

এখানে উত্তরের উপর ডিপেন্ড করবে আপনার জন্য ফেসবুকের বিকল্প আছে কিনা !!

যদি আপনার দীর্ঘমেয়াদি কোন প্ল্যান না থাকে, যদি আপনি আজিবন ফেসবুকেই মার্কেটিং করতে চান, ফেসবুককে শুধু মাস শেষে কিছু আয়ের পথ হিসেবে বেছে নিতে চান তবে আপনার কোন বিকল্প নেই। আপনারা ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, কোন সমস্যা হবে না আশা করি।

আর যাদের এটা মুল ব্যবসা, অনেক দূর এগিয়ে যেতে চান, শক্তিসালি সকল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম কে ব্যবহার করতে চান, ফেসবুকের বিকল্প খুজছেন তাদের জন্য শুধু ওয়েবসাইট হতে পারে একমাত্র বিকল্প মাধ্যম।

? কি কারন ??

বাংলাদেশে লিঙ্কডইন, টুইটার, পিন্টারেস্ট কিংবা টিকটিকের কথাই বলি এখানে সত্যিকার অর্থে তেমন অডিয়েন্স নেই যাদের মাধ্যমে লোকাল মার্কেটিং করা সম্ভব, যেটা ফেসবুকে করা যায়।

? তাহলে ওয়েবসাইট কেন বা কিভাবে এর বিকল্প ?

আপনি হয়তো জানেন না, দুনিয়ার যত মার্কেটিং হয় সব ওয়েবসাইট কেন্দ্রিক, জি ঠিকি শুনেছেন প্রায় ৯৩% মার্কেটিং হয় ওয়েবসাইটকে কেন্দ্র করে, ফেসবুক কিন্তু অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া তে মার্কেটিং করে আজকে ফেসবুক হয়নি, নিজেই ওয়েবসাইট দিয়েছে, তাই আপনি যেখানে মার্কেটিং করছেন তারাই কিন্তু সবার আগে ওয়েবসাইট করেই নিজের মার্কেটিং করেছে।

এই সামান্য যুক্তি দিয়েই বুঝতে পারবেন মার্কেটিং বলতে ফেসবুক হচ্ছে সব কিছুর মধ্যে ছোট্ট একটা প্ল্যাটফর্ম।

যে যেখানেই মার্কেটিং ক্যাম্পেইন তৈরি করুক না কেন, টার্গেট থাকে নিজেদের ওয়েবসাইটে নিয়ে আসার। আর নিজেদের ওয়েবসাইট থাকে নিজের মত করে গ্রাহককে বোঝানোর সব উপকরন।
মানে হল, আপনার ওয়েবসাইট আছে ধরে নিন, কি কি করতে পারবেন তা নিচে দেখুন, কোথায় কোথায় মার্কেটিং করতে পারবেন দেখুন।

? ফেসবুক থেকে ট্রাফিক কে ওয়েবসাইট নিয়ে যেতে পারবেন, এখানে ফেসবুক হল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম, আর আপনার ওয়েবসাইট হল টার্গেট প্ল্যাটফর্ম বা ল্যান্ডিং পেজ। বা গ্রাহক ডেস্টিনেশন আপনার ওয়েবসাইট।

? গুগল এডসঃ অর্থাৎ গুগলে কেউ আপনার ক্যাটাগরি এর প্রোডাক্টের কোন কিছু লিখে সার্চ দিলেই আপনার ওয়েবসাইট টি সবার উপরে চলে আসবে। এখানে গুগল সার্চ বা গুগল এডস হল আপনার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম। আর গ্রাহক যাবে আপনার ওয়েবসাইটে।

? গুগল ডিসপ্লে এডসঃ এটার মাধ্যমে আপনি চাইলে প্রথম আলো, জাগো নিউজ কিংবা বাংলাদেশের যে কোন অনলাইন নিউজ পেপারে আপনার প্রডাক্টের ইমেজ সহ প্লেস করতে পারবেন। এখানে প্রথম আলো হবে আপনার মার্কেটিং করার প্ল্যাটফর্ম আর ডেস্টিনেশন হবে আপনার ওয়েবসাইট।

? লিঙ্কডিন / টুইটার / টিকটিকঃ জি ঠিকি পড়ছেন, এমন কোন সাইট নেই যারা আপনার জন্য এড দিবে না, কিন্তু সেখানের এডে ক্লিক করলে চলে যাবে আপনার ওয়েবসাইটে।

? ইউটিউব থেকেও আপনি ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে বা ই-কমার্স সাইটে নিয়ে আসতে পারবেন।

উপরে সামান্য কিছু উদাহরন দিয়েছি, পুরো পৃথিবীর মার্কেটিং চলছে এভাবেই, যে কোন প্লাটফর্মে এড দিক কিনা সে যাবে তাদের ওয়েবসাইটে। এটাই ই-কমার্সের নিয়ম, আদতে এফ-কমার্স বোঝানোর জন্য মানুষ ব্যবহার করে। সত্যিকার অর্থে ফেসবুক দিন শেষে কোন ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম নয়, একটা সোশ্যাল মিডিয়া মাত্র। মানুষ এখানে কিনতে আসেনা, আসে সোশ্যাল এক্টিভিটির জন্য, সেখানে আপনি সুজোগে ব্যবসা করছেন সেটা ঠিক আছে, তবে এটাকেই ই-কমার্স বানিয়ে ফেললে ভুল টা আপনার ই।

✔✔ এক কথায় শুধু মাত্র আপনার একটি ওয়েবসাইট থাকলে আপনি ফেসবুক সহ দুনিয়ার বেশিরভাগ ওয়েবসাইট কে ব্যবহার করতে পারবেন আপনার মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।

এছাড়া আপনার ওয়েবসাইট সত্যিকার অর্থে আপনার একটা পরিচিতি, ফেসবুক পেজ কোন পরিচিতি নয়, আপনার পেজ থেকে লাখ টাকা সেল হতে পারে তবে এটা স্থায়ী কোন প্লাটফর্ম নয়।

? কারন ?

কারন যে কোন সময় ফেসবুক নিজেই আপনার পেজ বন্ধ করে দিতে পারে। সরকার এটাকে ক্ষতিকর হিসেবে ধরে পুরো ফেসবুককে বন্ধ করে রাখতে পারে। ফেসবুকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় আপনার ব্যবসার ক্ষতি হতে পারে।

? কিন্তু আপনি নির্বিকার হয়ে থাকতে পারবেন কিছু করতে পারবেন না। কারন এটা আপনার প্ল্যাটফর্ম নয়, আপনি বলতে পারবেন না এটা মুলত আপনার নিজের পেজ। কারন ফেসবুকের সাইটের কোন সমস্যা হলে নিজের পেজ বলে এখানে ঢুকতে পারবেন না, কিছু করতেও পারবেন না, যেমন টা ফেসবুক ডাউন হওয়ার সময় হয়েছে।

কিন্তু আপনার ওয়েবসাইট যেমন ই হোক, আপনি তাকে নিজের মত পরিবর্তন করতে পারবেন, নিজের মত করে সাজাতে পারবেন, বন্ধ হলে সমস্যা সমাধান করা আপনার নিজের উপর, সাথে যে কোন প্লাটফর্ম কে ব্যবহার করতে পারবেন মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে।

আপনার অডিয়েন্স আপনার সাইটে এসে পণ্য কিনবে, আপনাকে চিনবে, সত্যিকার পরিচিতি পাবেন। পেমেন্ট নিতে পারবেন আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে, সেখানে গ্রাহক যাবে, অনেক প্রোডাক্ট থেকে পণ্য কিনবে নিজের ইচ্ছে মত। দাম থেকে শুরু করে রিভিউ সব দেয়া থাকবে।

এখন হয়তো আপনার পেজ থেকে পণ্য কিনছে, কিছু দিন পর আপনার ওয়েবসাইট না থাকলে আপনার পেজ থেকে পণ্য কিনবে না এটা লিখে দেয়া গেলাম।

এখন কেমন ওয়েবসাইট করবেন, ওয়েবসাইটে অনেক ঝামেলা, ওয়েবসাইট করতে গেলে কি কি বিষয় দেখে বা জেনে নেয়া উচিত, কেমন প্রাইস হতে পারে এই বিষয়ে আমি আমার দ্বিতীয় পর্বে সহজ ও সাবলীল ভাবে বলার চেষ্টা করবো ইনশা আল্লাহ। আশা করি উপকৃত হবেন।

ধন্যবাদ পোস্ট টা পড়ার জন্য, কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই করবেন কমেন্টসে, আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।
#DigitalMarketer

সময় থাকতেই সঠিক ডিসিশন নিন!

কাস্টমার তো ইনবক্সে একটা স্ক্রিনশট দিয়েই অর্ডার করে – এটাই সহজ- ওয়েবসাইটে কে অর্ডার করবে? কি দরকার এতো টাকা খরচ করে ওয়েবসাইট তৈরি করার?

এই যাত্রায় প্রায় ৫ দিন ফেইসবুক বন্ধ থাকায় হাজার হাজার ফেইসবুক পেইজ থেকে লাইভ বন্ধ ছিল, ইনবক্সে অর্ডার নেয়া বন্ধ ছিল। অ্যাড যাদের রানিং ছিল রেজাল্টের কোন আউটপুট প্রায় ছিলই না বলা যায়। এটি নিয়ে গতকাল রাতে একটি পোস্ট করেছলাম।  যেখানে বলেছিলাম সামনের দিনগুলিতে বিভিন্ন কারণেই ফেইসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলি বন্ধ হতে পারে। এবার হয়ত ৫ দিন হয়েছিলো এর পর হয়ত তা ১০ বা ১৫ বা ৩০ দিনের জন্যও বন্ধ হতে পারে।

বিকল্প বা অল্টারনেট প্ল্যান হিসাবে বলেছিলাম নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে কিন্তু অনেকের কমেন্ট পরে যে ভয়াবহ তথ্য সামনে আসলো তা হল- অনেকেরই ওয়েবসাইট ঠিকই আছে কিন্তু তারা কাস্টমারদের ওয়েবসাইটে অর্ডার করতে উৎসাহিত করেন না বা মার্কেটিং করেনা না। এখন কথা হচ্ছে- যখন ফেইসবুক অফ থাকবে তখন যদি আপনি মনে করেন যে আপানর ওয়েবসাইট তো রানিং তাহলে ওয়েবসাইট এ অর্ডার ক্যানও আসে না? এখন এই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু আপনার কাছেই থাকতে হবে- যখন সময় ছিল নিজের ওয়েবসাইট এর মার্কেটিং করে আপনার কাস্টমার এর কাছে পরিচিতি করানোর তখন নিশ্চয়ই আপনি এটিকে অবহেলা করেছেন অথবা মোটেও জোর দেননি- যেহেতু ইনবক্সেই অর্ডার আসে কি দরকার আছে কাস্টমার কে আবার এক্সট্রা ঝামেলা করে ওয়েবসাইট এ অর্ডার এর কথা বলার। অনেকে তো এটাও মনে করেন যে ওয়েবসাইট এ অর্ডার করতে বললে যদি কাস্টমার আর অর্ডারই না করে?

এভাবেই আপনার কাস্টমারকে আপনি নিজেই অভ্যস্ত করেছেন ইনবক্সে মোবাইল নাম্বার দিয়ে আর স্ক্রিনশট দিয়ে কত সহজে অর্ডার করা যায়!

এভাবেই চলতে থাকলে তো ভালোই ছিল- কিন্তু সময়ের প্রয়োজনে নিজের বিজনেস এর প্রয়োজনেই আপনাকে আপনার ওয়েবসাইট রেডি শুধু রেডি না তাতে যাতে অর্ডার করে কাস্টমার তার জন্য বিভিন্ন মার্কেটিং স্ট্রাটেজি সেট করতে হবে। নাহলে সামনে আপনি ও আপনার বিজনেস এবং ফুল স্টাফদের নিয়ে লম্বা ছুটির প্ল্যান যেকোনো সময় হয়ে যেতে পারে।

যাদের কাছে মনে হবে এগুলি দরকার নেই- দয়া করে এই পোস্টটি ইগ্নর করুন তবে একটা স্ক্রিনশট রেখে দিতে পারেন- যেদিন এমন কিছু একটা হবে সেদিন হয়ত এই পোস্ট দেখার সুযোগও নাও থাকতে পারে, কারণ ফেইসবুকই হয়ত এক্সেস করা যাবে না 😀

ভালো থাকুন- আর বিকল্প ব্যাবস্থা রেডি করতে থাকুন- প্রতি মাসে মার্কেটিং বাজেট থেকে কিছু কিছু জমিয়ে ডোমেইন কিনুন এবং ধীরে ধীরে ওয়েবসাইট বানাতে থাকুন আর অবশ্যই আপনার কাস্টমারদের সবাইকে ওয়েবসাইটে অর্ডার করতে উৎসাহিত করুন। সবাইকে ধন্যবাদ!

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন করবেন?

কথায় আছে ঢেকি সর্গে গেলেও ধান ভানে, উদ্যোক্তারা অনেকটা ঢেকির মত। তারা সবসময় ব্যাবসা এবং  এর প্রসার নিয়ে ভাবে। একজন সফল উদ্যোক্তার সবচাইতে বড় গুন হচ্ছে সে থেমে থাকে না, যখন কোন সমস্যা আসে তখন ব্যাস্ত থাকে সমস্যা সমাধানের জন্য। আর যখন কোন সমস্যা না আসে তখন ব্যাস্ত থাকে নতুন নতুন এক্সপেরিমেন্টের জন্য। আর এই স্বভাবের জন্যই পৃথিবীতে ছোট ছোট অনেক স্টার্টআপ আজ অনেক বড় হয়েছে। নতুন নতুন আইডিয়া জেনারেট হয়েছে।

ফেসবুক সহ অন্যান্য সোসায়াল মিডিয়াগুলো এরকম আইডিয়ারই ফসল। আজ সোসায়াল মিডিয়া ছাড়া আমারা আমাদের জীবন চিন্তাই করতে পারি না। বাংলাদেশের প্রায় ৭৫ লক্ষ ফেসবুক ব্যাবহারকারি রয়েছে এবং এই সংখ্যা দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে।তাই আপনার যদি সোসায়াল মিডিয়া ছাড়াই পর্যাপ্ত ক্রেতা থাকে, তবুও সোসায়াল মিডিয়া মার্কেটিং এর দিকে আপনার নজর দেয়া উচিত। এটা আপনার ব্যাবসার প্রসার কয়েকগুন বাড়িয়ে দিতে পারে। আর যদি আপনার পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকে তাহলে অনলাইন মার্কেটিং হতে পারে কম খরচে পর্যাপ্ত ক্রেতা পাওয়ার উপযুক্ত মাধ্যম।

মার্কেটিং প্রেক্ষাপট থেকে আপনার লক্ষ কি হতে পারে?

  • আপনার পণ্য এবং প্রতিষ্ঠান এর পরিচিতি বৃদ্ধি।
  • মানুষকে আপনার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান অথবা ওয়েবসাইট এ আসতে উৎসাহিত করা।
  • আপনার পণ্যের ভাল দিক গুলো তাদের কাছে তুলে ধরা।
  • আপনার পণ্য বিক্রি করা।
  • ক্রেতার সাথে সুসম্পর্ক তৈরী করা, যাতে তারা পুনরায় পন্য ক্রয় করতে আসেন।
  • ক্রেতা যাতে তার পরিচিতজনদের কাছে আপনার প্রতিষ্ঠান / পন্য এর প্রশংসা করে তার ব্যাবস্থা করা।
  • আপনার নতুন নতুন পণ্য  অথবা বিশেষ অফার গুলো আপনার ক্রেতা অথবা সম্ভাব্য ক্রেতাদের নিকট পৌছে দেয়া।
  • আর সবশেষে তাদের কোন প্রশ্ন, অভিযোগ থাকলে তারা যেনো সেটা আপনাকে সহজেই জানাতে পারেন, এবং আপনি সেই অনুযায়ী ব্যাবস্থা নিতে পারেন সে ব্যবস্থা করা।

এছাড়াও ছোট বড় আপনার আরো অনেক লক্ষ থাকতে পারে। ব্যাবসার ধরন এবং মাপের উপর ভিত্তি করে আপনার লক্ষ, প্লান এবং এক্সিকিউশন ভিন্ন হতে পারে। সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেন করবেন তার কিছু কারন এখন বর্ননা করছি।

পরিচিতি বৃদ্ধি

যে কোন মার্কেটিং ক্যম্পেইন এর একটি মূল উদ্যেশ্য হচ্ছে কোন পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের পরিচিতি বৃদ্ধি করা। নতুন নতুন অফারগুলোকে প্রচার করা। সম্ভাব্য সব ক্ষেত্র থেকে ক্রেতা খুজে বের করা। আপনার ব্যবসা ছোট হোক অথবা বড়, ব্যবসার সফলতা অনেকটা নির্ভর করবে আপনি কতটা পরিচিত। আপনি যত বেশী পরিচিত, আপনার ক্রেতা পাওয়ার সম্ভাবনা তত বেশী। আর আপনি যদি পরিচিতি পেতে চান আপনাকে সেখানেই একটিভ থাকতে হবে যেখানে আপনার সম্ভাব্য ক্রেতার উপস্থিতি রয়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টিভি, রেডিও এবং পত্রিকার পর সোস্যাল মিডিয়া বেশী জনপ্রিয়, এবং এর জনপ্রিয়তা যেভাবে বাড়ছে খুব দ্রুত এটা অন্য সবগুলাকে ছাড়িয়ে যাবে অথবা আরো বেশী জনপ্রিয় হবে তা সহজেই অনুমান করা যায়।

ফেসবুকের জনপ্রিয়তা যাচাই করার জন্য আপনি নিচে প্রদত্ত ডাটা গুলো দেখে নিতে পারেন।

২০১০ সালে ফেসবুকের নিবন্ধিত ব্যাবহার কারি ছিলেন ৩৫০ মিলিয়ন। ২০১১ সালে তা বেড়ে দারায় ৭৫০ মিলিয়ন। এ থেকেই ধারনা করা যায় মানুষ সোস্যাল মিডিয়ার উপরকি পরিমান আসক্ত হচ্ছে।তাই সোস্যাল মিডিয়া ব্যাবহার করে আপনি খুব দ্রুতই আপনার পণ্য অথবা ব্যাবসার পরিচিতি বৃদ্ধি করতে পারেন।

 

যোগাযোগ তৈরী

আপনি অনেক পরিচিতি পেলেন, কিছু ক্রেতাও পেলেন, কিন্তু এর মানে এই নয় যে আপনার কাজ শেষ বা আপনি সফল হয়ে গেলেন। কাজের প্রথম ধাপ সম্পন্ন হলেও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি আপনাকে এখনই করতে হবে। আর তা হচ্ছে ক্রেতার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা। তারা আপনার পণ্য বা সেবাতে সন্তুষ্ট কিনা এর উত্তর বের করা। তাদের কোন অভিযোগ অথবা পরামর্শ আছে কিনা তা জানতে চাওয়া। অথবা আপনার পণ্য এবং সেবা সংক্রান্ত যেকোন ব্যাপারে তারা কোন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কিনা এবং হয়ে থাকলে সেটা কি ধরনের। এই উত্তর গুলো যদি আপনি বের করতে না পারেন এবং বের করার পর যদি এর সমাধান বের করতে না পারেন তাহলে আপনি যতই প্রচারনা চালান, আপনার ব্যবসা বেশীদিন টিকে থাকবে না। আর এই উত্তর গুলো পাওয়ার সব চাইতে সহজ উপায় হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া। কারন মানুষ ফোনে অথবা সামনা সামনি অভিযোগ দেয়ার চাইতে লিখতে বেশী সাচ্ছন্দ বোধ করেন। একই ঘটনা ঘটবে প্রশংশা করার বেলায়। আবার সোস্যাল মিডিয়াতে লিখার সময় মানুষ পর্যাপ্ত সময় নিতে পারে, যা অন্য মাধ্যমগুলাতে সম্ভব নয়। তাই সোস্যাল মিডীয়াকে শুধু মাত্র প্রচারনার জন্য ব্যাবহার করা হলে তা ভুল হবে। সোস্যাল মিডিয়াকে ক্রেতা অথবা সম্ভাব্য ক্রেতার সাথে যোগাযোগ এর মাধ্যম হিসেবে ব্যাবহার করতে হবে।

ভাইরাল প্রমোশন

মানুষ শেয়ার করতে ভালোবাসে, সোস্যাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো বেশী সত্য। মানুষ সারাদিন কি করলো, কিভাবে করলো, কোথা থেকে করলো এই ধরনের ঘটনাগুলো সবচেয়ে বেশি শেয়ার করে। এই সুযোগটাই আপনাকে কাজে লাগাতে হবে। একটা উদাহরন দেই, পিজা হাটে এই রোযার মাসে ইফতারের সময় ৮০০ টাকায় একজনের জন্য আনলিমিটেড পিজা এর ব্যাবস্থা রয়েছে। এই খবরটি হয়ত অনেকেই জানতেন না। একটা স্ট্যাটাস দিন, “আজ পিজা হাটে ৮০০ টাকায় ৪ টা পিজা খেয়েছি, হুররে!” আর কিছু লাগবে না, আপনার ফ্রেন্ডলিষ্ট থেকে কম করে হলেও ৩০-৪০ জন নতুন মানুষ এই তথ্যটা পেয়ে যাবে, তার মানে কোন খরচ ছাড়াই প্রচারনা। আর এই ৩০-৪০ জন এর থেকে যদি একজনও যায় তাহলে এখানেও খরচ ছাড়াই কাষ্টমার। এখন পিজা হাটের পরিবর্তে আপনার ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানকে ভাবুন, আপনিও একই ভাবে সুবিধা পেয়ে যেতেন।

পণ্য অথবা সেবা বিক্রি করা

একজন ব্যাবসায়ী হিসেবে আপনার কাজ হচ্ছে আপনার ক্রেতার সব চাওয়া, সব সুবিধা তাদের হাতের কাছেই রাখা, আর তা করতে হলে আপনাকে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং গুরুত্বের সাথে নিতে হবে। আপনাকে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কৌশল গুলো জানতে হবে। তাহলেই আপনি এই চ্যানেল থেকে পর্যাপ্ত সুবিধা নিতে পারবেন, আপনার ব্যাবসার প্রসার ঘটাতে পারবেন।

আজ আর নয়, সামনে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কৌশলগুলো নিয়ে লিখব। আমার পরবর্তী লিখাগুলো আপনার ইনবক্স এ পেতে নিচের ফর্ম এ সাবস্কাইব করুন। আর আপনার মতামত কমেন্ট এর মাধ্যমে তুলে ধরুন, আপনার মুল্যবান মতামত আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।

লিংক শেয়ার করা মানেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং?

এখনি আপনি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ার লিংক শেয়ার করুন আর দেখুন কিভাবে আপনার পেজ ২ ঘন্টায় ভাইরাল হয়ে যায়। এর পর আপনার পেজের মেসেজ অপশনে গিয়ে দেখুন মেসেজে ভরপুর হয়ে রয়েছে। আপনি কোনটা রেখে কোনটার রিপ্লাই দিবেন ঠিক বুঝতে পারছেন না।

সিরিয়াসলি…!!??  আপনারও কি তাই মনে হয়….??

ঠান্ডা মাথায় একটু ভাবুন তো এতোটাই সহজ…!! শুধুমাত্র লিঙ্ক শেয়ারকেই সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বলে…??

কখনোই না শুধু ফেইসবুকের লিঙ্ক শেয়ার করলেই সেটা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং হয়ে যাবে না।

 তাহলে আসুন জানা যাক আমাদের ঠিক কি কি করনীয়ঃ

##সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

  •  যে বিষয়ের উপর আপনি মার্কেটিং করবেন প্রথমত সেই বিষয়ে আপনাকে প্রচুর রিসার্চ করতে হবে। উক্ত বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়তে আপনার নিজেকে প্রভাবশালী করে গড়ে তুলতে হবে।
  •   আপনি যখন মার্কেটিং করবেন আপনাকে অবশ্যই কোন একটি স্বতন্ত্র কৌশল অবলম্বন করেই মার্কেটিং করতে হবে। তা না হলে সাড়া পাবেন না।
  •   কোয়ালিটি সম্পন্ন কন্টেন্ট নাহলে সেটা আপনার গ্রাহক বা ক্লাইন্ট স্কিপ করে বা না পড়ে চলে যাবে। এমন ভাবে কন্টেন্ট বা ব্লগ গুলো লিখতে হবে যেন সেটা আপনার ক্লায়েন্টকে প্রথম দেখাতেই আকৃষ্ট করে।
  •   মার্কেটিং পরিকল্পনা করার আগে, আপনার টার্গেটিং ক্লাইন্ট খুজে বের করতে হবে।
  •   আপনার টার্গেন্টিং ক্লায়েন্টের চিন্তাভাবনা এবং চাহিদা গুলো রিসার্চ করে আপনার কোম্পানির গোল বা পরিকল্পনা সেট করতে হবে।
  •   দিনের শেষ দিকে অর্থাৎ বিকালের দিকে পোস্ট করুন, এতে পোস্টে এঙ্গেজমেন্ট বেশি পাবেন। কারন এই সময়টাতে সবাই কাজ শেষ করে অফিস থেকে বাসায় ফিরে। আর এটাই পার্ফেক্ট সময় পোস্ট করার জন্য, এই সময়টাতেই সবাই তার পার্সোনাল লাইফে প্রবেশ করে।
  •   পেজে এমন ভাবে পোস্ট করুন যেন গ্রাহকের আপনার উপর আস্থা বাড়ে। সেই ক্ষেত্রে নিজেকে রেফারেন্স দিয়ে পোস্ট করতে পারেন। যেমনঃ “ আমি বিশ্বাস করি সমাহার ডট নেট একটা সময় বাংলাদেশের সেরা কোম্পানি হবে।”
Cart
Your cart is currently empty.