সোনার ব্যবসা

0

কিভাবে সোনা সংক্রান্ত ব্যবসা শুরু করা সম্ভব?

অনেকেই মনে করে থাকেন জে কোনো ব্যাক্তির বাহ্যিক সৌন্দর্যে তার মানসিক অবস্থার বহিপ্রকাশ ঘটায়। সেই কারনে সারা পৃথিবীর অধিকাংশ মানুষই এই চেষ্টা করে যে কোনো অলঙ্কার ব্যবহার করে যদি আরও বেশি করে বাহ্যিক সৌন্দর্যের প্রকাশ ঘটানো যায়। আর অলংকারের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় অলংকার হল সোনায় তৈরি অলংকার। সোনা বহু যুগ ধরে অলংকার প্রস্তুতকরনের কার্জে ব্যবহার করা হয়ে এসেছে। তাই সোনা অলংকার প্রস্তুতকারী এবং ব্যবহারকারীদের কাছে একটি খুবই জনপ্রিয় ধাতু। এই কারনে বহু মানুষ বর্তমানে সোনার ব্যবসা শুরু করার উদ্যগ নিচ্ছেন এবং তারা সাফল্যও লাভ করছেন। তাই আপনি যদি নিজের ব্যবসা শুরু করতে ইচ্ছুক হয়ে থাকেন, তবে আপনার কাছে সোনার ব্যবসা শুরু করা একটি ভাল রাস্তা হয়ে দাড়াতে পারে।

সোনার ব্যাবসা দীর্ঘকাল ধরেই সারা পৃথিবীব্যাপি বাজারের একটা বড় অংশ দখল করে আছে। বহু মানুষ সারা বিশ্বে প্রতিদিন সোনা ব্যবহার বিভিন্ন অলংকার প্রস্তুত করছেন যা বাজার মারফৎ পৌঁছে যাচ্ছে ভুক্তাদের কাছে। এটিই সোনার ব্যবসার সবচেয়ে বেশি পরিচিত রুপ। তবে এতি এই ব্যবসার একমাত্র রুপ নয়। আপনি ইচ্ছে করলে সোনার গয়না প্রস্তুত না করেও আরও অনেক রকম ভাবে সোনা সংক্রান্ত ব্যবসার সাথে যুক্ত হতে পারেন। তাই আমরা এরই মধ্যে কিছু উপায় বলার চেষ্টা করব যা ব্যবহার করে আপনি সরাসরি সোনার গহনা প্রস্তুত না করেও এই ব্যবসার সাথে যুক্ত হতে পারবেন। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক এই ব্যবসাগুলি সম্পর্কে।

সোনা সংক্রান্ত কিছু ব্যবসায়িক ক্ষেত্র

১)খুচরা ব্যবসা-

যারা সোনার গহনা প্রস্তুত করে তারা যে সবসময়ে সরাসরি উপভক্তাদের পন্য বিক্রয় করে তা নয়ে। তারা অনেক্ষেত্রে এমন ব্যবসায়িদের এই পন্য বিক্রয় করে যারা সেই পন্য পুনরায় বিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করে। এই সমস্ত ব্যবসায়িদের সোনার খুচরা ব্যবসায়ি বলা হয়। এই  ব্যবসা শুরু করতে পারলে আপনি কোনরকম উৎপাদন খরচ ছাড়াই ব্যবসা ছালিয়ে যেতে পারবেন। তবে যেহেতু আপনি সরাসরি প্রস্তুতকৃত গহনা ক্রয় করছেন তাই এই ব্যবসায় আপনাকে পন্য ক্রয়ের জন্য কিছুটা বেশি অর্থ প্রদান করতে হবে।

২)গোল্ড বন্ড-

সোনা সংক্রান্ত ব্যবসার আরও একটি উল্লেখযোগ্য উপায় হল গোল্ড বন্ড ক্রয় করা এবং সঠিক সময়ে তা পুনরবিক্রয় করে অর্থ উপার্জন করা। এই ব্যবসায় আপনাকে সরাসরি সোনা বা সোনার গহনা কখনই কিনতে বা মজুত করতে হয় না। তা সত্বেও আপনি যে ব্যবসায়িক কাজকর্ম করেন তা সোনার সাথে সরাসরি যুক্ত। এই ব্যবসা আপনি খুব কম পরিমান অর্থ দিয়েও শুরু করতে পারেন।

৩)গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড-

মিউচুয়াল ফান্ড হল সেই ক্ষেত্র যখন একাধিক মানুষের অর্থ এক স্থানে নিয়ে এসে সেই অর্থ ব্যবহার করে কোনও বিশেষ পন্য ক্রয় করা হয়। সাধারনত অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে এই পন্য হল আসলে বিনিয়গ। বিনিয়গ করার অর্থ হল কোন ব্যাবসায়িক বা অব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ডের জন্য কিছু অর্থ প্রদান করা হয় যার পরিবর্তে সেই প্রতিস্টহান যখন মুনাফা সম্মুখীন হয় তখন তার একটা অংশ বিনিয়োগকারীকে দিয়ে থাকে। গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে সেই সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার করে সোনা বা দামি গোল্ড বন্ড কেনা হয় যা পরে আরও বেশি দামে বিক্রয় করা সম্ভব।

এইরকম আরও একাধিক ব্যবসা রয়েছে যে ক্ষেত্রে সরাসরি সোনার গহনা প্রস্তুত না করেও আপনি সোনা সংক্রান্ত ব্যবসার সুচনা করতে পারেন। তবে এই সকল ব্যবসার কোনোটিই সোনার গহনা প্রস্তুতকারী ব্যবসার মত মুনাফা বহন করে না। কারন সোনার গহনার মুল্য বর্তমান বাজারে প্রচুর। তাই এই ব্যাবসায় অবতরন করার জন্য যারা সাধারণত উদ্যোগি হয় তাদের অধিকাংশই এই মূল ব্যবসার সাথে জুক্ত থাকতে ইচ্ছুক হন। তাই জন্য আমরা সেই মুল ব্যবসা শুরু করার প্রয়োজনীয় উপাদান এবং পদ্ধতি সম্পর্কে বলব।

সোনার ব্যবসা শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রাথমিক উপাদান

সোনার ব্যবসার জন্য অন্যান সকল ব্যবসার মতোই প্রাথমিকভাবে কিছু কিছু উপাদানের প্রয়োজন হয়। তাই আপনি যদি এই ব্যবসা শুরু করতে চান, তবে আপনার উচিত হবে এই সকল উপাদান গুলি সম্পর্কে জেনে নেওয়া।

১)অর্থ-

যেকোনো ব্যাবসার ক্ষেত্রেই অর্থ একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ  একটি উপাদান। তবে সোনার ব্যাবসায়ে এই উপাদানকে এককথায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বলা যেতে পারে। তার কারন হল সোনা পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান ধাতু এবং সবচেয়ে মুল্যবান পদার্থগুলির মধ্যে অন্যতম। আর এই ব্যাবসার ক্ষেত্রে কাছামার হল এই সোনা। তাই পর্জাপ্ত পরিমানে সোনা ক্রয় করতে গেলে আপনার অর্থের প্রয়োজনও প্রচুর। তাই এই ব্যাবসা শুরু করার আগে প্রাথমিক পর্বেই আপাকে প্রচুরপরিমানে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে।

২)প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি-

সোনার গহনা তৈরির কাজ কাজ করার জন্য বেশ কিছু বিশেষ জন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয়। উদাহরন স্বরুপ বলা যেতে পারে স্বর্ন পরিক্ষক যন্ত্র, মেটাল কিট ইত্যাদি। এ ছাড়াও আরও অনেক যন্ত্র এই কাজে ব্যাবহ্রিত হয়ে থাকে। আর এই যন্ত্রগুলি কোনো একটি অচল হয়ে থাকলে উৎপাদনের কাজ আরও অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়। তাই আপনাকে প্রাথমিক পর্বে এই সব যন্ত্রের ব্যাবস্থা করতে হবে।

৩)দক্ষ কর্মচারি-

সোনার গহনা তৈরির জন্য সোনার উপর যে কারুকার্জ করা হয় তা খুবই সুক্ষ। তাই এই কাজ যারা করবে, তাদের এই কাজে পারদর্শী হতে হবে। তাই এই ব্যাবসা শুরু করার আগে আপনাকে দেখে নিতে হবে যে যাদের আপনি নিজের কর্মচারি হিসেবে বা শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ করছেন তারা এই কাজে দক্ষ কিনা।

ব্যবসা শুরু করার পদ্ধতি

আমরা ইতিমধ্যে জেনে গেছি যে এই ব্যাবসা শুরু করতে কি কি উপাদান প্রয়োজন। তবে এই ব্যাবসা শুরু করার জন্য একটি নির্দিস্ট পদ্ধতি অনুসরণ করতে হয় আর এই ব্যাবসা শুরু করতে গেলে আপনাকে এই পদ্ধতিটি সম্পর্কে জানতেই হবে। তাই আসুন আর সময় নস্ট না করে জেনে নিই এই পদ্ধতি সম্পর্কে।

১)অর্থসংস্থান-

আমরা আগেই জানিয়েছি যে এই ব্যাবসায় সবচেয়ে বেশি পরিমানে যা প্রয়োজন তা হল অর্থ। তাই ব্যাবসার পরিকল্পনা পর্বেই বা তারও আগে আপনাকে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করে ফেলতে হবে।

২)কাঁচামাল ক্রয়ের ব্যবস্থা-

এই ব্যাবসার মূল কাঁচামাল হল সোনা। তাই এই ব্যাবসায় নামার আগে আপনাকে দেখে নিতে হবে যে কোন ব্যাবসায়ি সবচেয়ে কম এবং ন্যায্য দামে সঠিক গুনমানের সোনা বিক্রয় করছে। বাজারে সমীক্ষা করলেই এই প্রস্নের উত্তর আপনি পাবেন। আর সেই উত্তর পেয়ে গেলে আপনার উছিত যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেই ব্যাবসায়ির সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে সোনা ক্রয়ের ব্যাবস্থা করা।

৩)কর্মশালা গঠন ও কর্মচারী নিয়োগ- 

এর আগের উল্লেখ্য সবকটি পদক্ষেপ আপনার যদি গ্রহন করা হয়ে গিয়ে থাকে, তবে আপনাকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের কর্মশালা গঠন করে নেওয়া এবং সেই কর্মসালায় দক্ষ কর্মছারি নিয়গের ব্যাবস্থা করে ফেলা। এই কাজ আপনার ব্যাবসার প্রস্তুতি পর্বের শেষ কাজ। এর পরেই আপনি আপনার কর্মচারিদের সহায়তায় সোনার গহনা প্রস্তুত করে ব্যাবসায়িক কর্মকান্দ শুরু করতে পারেন।

এতক্ষন ধরে আমরা সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচোনা করলাম। আমরা আগেই কিছু এমন ব্যাবসার ক্ষেত্রের কথা বললাম যেখানে সরাসরি গহনা উৎপাদন না করেও আপনি সোনার ব্যাবসার সাথে যুক্ত থাকতে পারেন। তারপর আপনাকে আমরা সোনার ব্যাবসার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান এবং সোনার ব্যাবসা শুরু করার পদ্ধতি সম্পর্কে বললাম। এইগুলি জানা থাকলে আপনি সহজেই নিজের সোনা সংক্রান্ত ব্যাবসা শুরু করতে পারবেন।তাই আর এক মুহুর্ত সময়ও না নস্ত করে এক্ষুনি নিজের ব্যাবসার জন্য পরিকল্পনা শুরু করুন। আমাদের এই প্রবন্ধ থেকে আপনি সাহায্য নিতে পারেন। তাহলে আপনার পরিকল্পনা আরও  মজবুত হবে এবং আপনাকে তা সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবে।

Choose your Reaction!
Leave a Comment
Cart
Your cart is currently empty.