বাড়িতে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে জীবাণু লুকিয়ে থাকতে পারে। ঘরের সেই কোণা বা জায়গাগুলো বারবার পরিষ্কার করার পরও দেখা যায় একটু না একটু জীবাণু সেখানে থাকেই যায়। ছত্রাক, জীবাণু বা এই ব্যাকটেরিয়া থেকে বাঁচতে প্রত্যেকে যতটা সম্ভব জিনিস বা জায়গাগুলো পরিষ্কার করার চেষ্টা করে। কিন্তু, দিনশেষে এগুলো এড়িয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব। কিন্তু আমরা যেটা করতে পারি তা হচ্ছে সর্বপ্রকার সতর্কতা অবলম্বন করা। এই সমস্ত জীবাণু এড়ানো সত্যি অসম্ভব কিন্তু এই জীবাণুগুলো হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করার চেষ্টা করতে পারেন। এই বিষয়ে আরও জানাতে আজকের এই ব্লগটি নিয়ে এসেছি।
কিচেন সিংক

ঘরের ভেতর জীবাণু থাকার কয়েকটি জায়গা এর মধ্যে রান্নাঘর হচ্ছে অন্যতম একটি জায়গা। তগবেষণা অনুসারে, রান্নাঘরের সিঙ্কে নাকি ওয়াশরুমের চেয়ে বেশি জীবাণু খুঁজে পাওয়া যায়। তথ্যটি জেনে অবাক হলেও এটাই সত্যি। কিচেন সিংক হচ্ছে এমন একটি জায়গা যেখানে সমস্ত ধরণের বাসনকোসন এবং শাক সবজিগুলো ধুয়ে ফেলা হয়। ধোঁয়ার ফলে যে ময়লাগুলো জড়ো হয় সেখানে ই-কোলি(e.coli) এবং সালমোনেলা (salmonella) এর মতো ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া গঠনের পথ খুঁজে পায়। মাসে একবার অন্তত একবার ব্লিচ সলিউশন ব্যবহার করে কিচেন সিংক স্যানিটাইজ করলে এই বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। এছাড়াও, পুরো সিংকটি ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
টুথব্রাশ হোল্ডার

আপনার বাসার বাথরুমগুলোই নিঃসন্দেহে জীবাণুযুক্ত থাকা ও জন্ম নেওয়ার বড় জায়গা। আর বাথরুমের কথা বলতে গেলে আপনার মাথায় টয়লেট সিটের কথাই আসবে। বাথরুম পরিষ্কারের ক্ষেত্রে টয়লেট সিটের অগ্রাধিকারই বেশি। আমরা খুব কমই বুঝতে পারি যে, টয়লেট ফ্লাশ থেকে বের হয়ে আসা ব্যাকটেরিয়াগুলো টুথব্রাশহোল্ডার থেকে শুরু করে বাথরুমের মেঝেতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই, বাথরুমে রাখা ব্যবহারের সব জিনিসপত্রই কমবেশি দূষিত হবার সম্ভাবনা থাকে। প্রতিদিন দাঁত পরিষ্কার করাও একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সুতরাং, আপনি যে সরঞ্জামগুলি ব্যবহার করছেন সেগুলো পরিষ্কার বা জীবাণুবিহীন কিনা তা নিশ্চিত করতে আপনার টুথব্রাশ হোল্ডারকে টয়লেট সীট থেকে যথেষ্ট দূরত্বে রাখুন।
রিমোট কনট্রোল

প্রতিদিন আপনি রিমোটটিকে কতবার স্পর্শ করেন সে সংখ্যা নিশ্চয়ই আপনার জানা নেই। কি ঠিক বলছি না? এটা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়! তবে এই ডিভাইসের ঘন ঘন ব্যবহার স্বয়ংক্রিয়ভাবে জীবাণুর জন্ম দেয়। রিমোট কনট্রোলটিকে স্পর্শ করা ছাড়াও এমন অনেক সময় হয় এটাকে ফেলে দেওয়া হচ্ছে কিংবা এটা হাতে থাকা অবস্থায়ই হাঁচি বা কাশি দেয়া হচ্ছে। ফলস্বরূপ, ডিভাইসটি সবার হাতে চলাচল করছে এবং ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে ক্ষতিকর জীবাণু। তাই আপনি যদি ঘরের ভেতর স্বাস্থ্যকর পরিবেশ রাখতে চান এক্ষেত্রে, পানিতে ব্লিচিং পাউডার মিশিয়ে ভেজা কাপড় দিয়ে রিমোট মুছতে হবে বারংবার।
মোবাইল ফোন

আমরা প্রয়োজনের খাতিরেই এটা বেশি ব্যবহার করে থাকি। এমন অনেকেই নিশ্চয়ই আছেন যারা ফোন হাতে করে বাথরুমেও ঢুকে পরেন। বাথরুমে থেকে ফোন ব্যবহার করেন। ঘন ঘন টেক্সট পাঠানো ফোনে নানান ভিডিও দেখা এই সমস্ত কারণে, ফোনের সাথে নানারকম ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া এসে বাসা বাঁধে। তাই ফোন পরিষ্কার করতে মাইক্রোফাইবার কাপড় ব্যবহার করুন এবং ফোন স্ক্রিন মুছে নিন।
পোষা প্রাণীর খাবারের বল

আদরের পোষা প্রাণীটার খেয়াল রাখতে হবে বেশি। আদরের পোষা প্রাণীটি যে খেলনা বা বস্তু দিয়ে খেলা করে সেটিই সাধারণত জীবাণু থাকার অন্যতম একটি জায়গা হয়ে ওঠে। এছাড়াও, তাদের খাদ্য গ্রহণের পাত্রটিও কিন্তু হতে পারে জীবাণু থাকার আস্তানা। তাই পোষা প্রাণী ও ঘরের পরিচ্ছন্নতা বজার রাখতে এদিকে খেয়াল করুন।
ঘরের ভেতর জীবাণু থাকার কয়েকটি জায়গা এর মধ্যে এই জায়গাগুলো বেশি মুখ্য। আসলে ঘরের সমস্ত জায়গাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কোন ব্যতিক্রম নেই। তবুও এই কয়েকটি জায়গা একটু বেশি সাবধান হতে হবে। কেমন ছিল আজকের এই টিপসগুলো? মন্তব্য জানাতে কমেন্ট করুন।
সূত্রঃঃ বিপ্রপাটি
You must be logged in to post a comment.